বরাবরই গেরুয়া বাহিনীর লুম্পেনদের ‘টার্গেটে’ থাকে দিল্লীর জেএনইউ। এবারের অভিযোগ আরও মারাত্মক। জেএনইউয়ের বাম ছাত্র সংসদের অভিযোগ, দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের এবিভিপি-র গুন্ডারা ব্যাপক সংখ্যায় লোহার রড নিয়ে হামলা চালায় বিশ্ববিদ্যালয়ে। তারপর সেখানেই থেমে না থেকে ছাত্রীদের হোস্টেলেও তাঁরা আক্রমণ চালায়। রবিবার সন্ধ্যার এই ঘটনায় তোলপাড় পড়ে গিয়েছে গোটা দেশজুড়ে। পরে আহত পড়ুয়াদের দেখতে হাসপাতালে যান কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।
জানা গেছে, রীতিমতো লোহার রড দিয়ে মারা হয় পড়ুয়াদের। বাদ যাননি ছাত্র সংসদের সভাপতি, বাংলার মেয়ে ঐশী ঘোষও। তাঁকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। মাথা ফেটে যায় তাঁর ও অনেক পড়ুয়ার। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। ঐশীকে ভর্তি করা হয়েছে এইমসের ট্রমা কেয়ার ইউনিটে। ছাত্র সংসদের অভিযোগ, সেইসময় পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীরা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, হামলার সময় ছাত্রীরা সবরমতী হোস্টেলের মহিলা শাখায় গিয়ে নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করেন। সেইসময় আক্রমণকারীরা গোটা করিডরে ভাঙচুর চালায়। বাইরের কার পার্কিংয়েও চালানো হয় ভাঙচুর। গোটা ঘটনাটিকে জেএনইউ-তে এমারজেন্সি বলে টুইটারে উল্লেখ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ।
ছাত্রসংসদের দাবি, মুখে মুখোশ পরে হামলা চালিয়েছে আক্রমণকারীরা। এবিভিপি’র লুম্পেন বাহিনীর বিরুদ্ধে উঠেছে অভিযোগ। জেএনইউ কর্তৃপক্ষ এবং এবিভিপি’র বিরুদ্ধে প্রতিবাদের স্বর আরও জোরালো করার আহ্বান জানিয়েছে ছাত্রসংসদ। ফি বৃদ্ধি-সহ কর্তৃপক্ষের একাধিক ছাত্রবিরোধী নীতির অভিযোগ তুলে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে জেএনইউ’র ছাত্রছাত্রীরা। তাঁদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন দমাতে এর আগেও একাধিক হামলা চালিয়েছে কর্তৃপক্ষ, পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগ এমনই।
সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সুশীল সমাজ- সকলেই একযোগে নিন্দা শুরু করেছেন। ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন রাজনীতিকরা। টুইট করে কেন্দ্রকে একহাত নিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছাত্রছাত্রীদের পাশে থাকার কথাও বলেছেন তিনি। এছাড়াও রাহুল গান্ধী, এমকে স্ট্যালিন, অখিলেশ যাদব থেকে শুরু করে রূপোলি পর্দার বিভিন্ন অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও গোটা ঘটনার নিন্দা করে টুইট করেছেন।
তবে এবিভিপি-র বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও তাঁদের দাবি, হামলা তাঁরা নয়, বরং তাঁদের ওপরই হামলা চালানো হয় প্রথমে। এবিভিপি-র পশ্চিমবঙ্গের সহ সভাপতি সুবীর হালদারের দাবি, এবিভিপি এসব কাজ করে না। জেএনইউ-র বামপন্থীরা নিজেরাই নিজেদের ওপর হামলা চালিয়েছে।