ক্ষমতায় এসেই বাংলার শিল্প-সংস্কৃতি-কৃষি-শিক্ষা প্রতিটি ক্ষেত্রেরই হালহকিকত বদলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের প্রতিটি খুটিনাটি বিষয়েই তাঁর কড়া নজর। তাই উত্তরবঙ্গের চার জেলা উত্তর দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও দার্জিলিংয়ে ধান সংগ্রহের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়াও নজর এড়ায়নি তাঁর। এবং নজরে আসতেই খাদ্য দফতরকে অবিলম্বে তা চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন ক্ষুব্ধ মমতা।
মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের আধিকারিকরা দেখেছেন, সরকারি কেন্দ্রে ধান না-কেনার জন্য এই চার জেলাতে অভাবি দামে চাষি ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আগামী ৩১ জুলাই ধান কেনার মরসুম শেষ হচ্ছে। কিন্তু মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজ্যে লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে সাড়ে আট লক্ষ মেট্রিক টন কম ধান সংগ্রহ হয়েছে। তাই রাজ্য সরকার ধান কেনার মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব বিবেচনা করছে।
খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, গত কয়েক মাস উত্তরবঙ্গের চার জেলায় ধান কেনা হয়নি। যদিও খাদ্য দফতরের খাতায় সেখানে ধান কেনার জন্য শিবির চলছে বলে উল্লেখ রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের এক আধিকারিক উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়ে তা মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনেন। তিনি দেখেন, চার জেলার কৃষক বোরো ধান ১১০০ টাকা কুইন্টাল দরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। কারণ, সেখানে সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্রগুলি খুলছে না।
অথচ, সরকারি কেন্দ্রে ওই ধান বিক্রি করলে কুইন্টাল প্রতি ১৭৫০ টাকা দাম পেত। উপরন্তু সরকারি কেন্দ্রে এসে বিক্রি করার জন্য অতিরিক্ত প্রতি কুইন্টালে ২০ টাকা পেত। মুখ্যমন্ত্রী এই খবর জানার পরই খাদ্য দপ্তরকে অবিলম্বে চার জেলার চালকল মালিক ও সোসাইটিগুলির সঙ্গে বৈঠক করা নির্দেশ দেন।
সরকারি সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়েই মঙ্গলবার চার জেলার ২৫ চাল কল মালিক ও বেঙ্গল রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী সভাপতি আব্দুল খালেকের সঙ্গে বৈঠক করেন খাদ্য মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদারও। বৈঠকে চাল কল মালিকদের ধান কেনার কাজে সহযোগিতা করার আবেদন জানান হয়। পাশাপাশি সংগৃহীত ধান চাল করে সরাসরি এফসিআইকে বিক্রির নির্দেশ দেন মন্ত্রী। অ্যাসোসিয়েশনের তরফে রাজ্যের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করার আশ্বাস দেওয়া হয়।