সেলুলয়েডের পর্দা কাঁপিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৌজন্যে অভিনেতা দেব পাঁচ বছর আগে পা রেখেছিলেন রাজনীতির ময়দানে। গত লোকসভা ভোটে ঘাটাল কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি এবং বিপুল ভোটে জিতেছিলেন। এবারেও ঘাটালে তিনিই প্রার্থী। বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে নিজের নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য পেশ করেন দেব। সভামঞ্চ থেকে সকলের কাছে আবেদন জানালেন, ‘কাজ দেখে ভোট দিন’।
দেব জানালেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাতে যে উন্নয়ন এনেছেন তা আর কেউ করতে পারেননি। তাঁর এই কর্মধারাকে সম্মান জানাতে, তাঁর প্রতি সমর্থনের হাত শক্ত করতে সকলকে আহ্বান জানান দেব। দেব পরিষ্কার জানান, ঘাটালের মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে সংসদে বাংলায় তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন। তা গ্রাহ্যও হয়। তবে কেন্দ্রের তরফে কোনও টাকা বরাদ্দ না হওয়ায় এই প্রকল্প চালু হয়নি। যতদিন না এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে, ততদিন তিনি লড়ে যাবেন বলে জানান।
রাজনৈতিক সৌজন্য বজায় রেখেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত বলে মনে করেন তিনি। বলেন, ‘কারও বিরুদ্ধে তিক্ত মন্তব্য করব না, কারও বিরুদ্ধে কটূক্তি নয়। নির্বাচনে লড়াই করতে এসে শুধুমাত্র দলের কথা বলব। উন্নয়নের কথা বলব। আমার বিরুদ্ধে যিনি বিজেপি–র প্রার্থী হয়েছেন তাঁকেও বলব, কুৎসা নয়, কাদা ছুঁড়ে নয়, নিজের দল নিয়ে, দলের উন্নয়নের ধারা নিয়ে কথা বলুন।’ মমতার সৌজন্যের রাজনীতির ধারাকে বজায় রেখেই ঘাটাল কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থীর উদ্দেশ্যে টুইট করে একসঙ্গে কাজ করার কথা লেখেন।
এই সভায় তথ্য দিয়ে তুলে ধরেন রাজ্য সরকারের কাজের খতিয়ান। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘যে কন্যাশ্রীর জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জ সেরার স্বীকৃতি দেয়, কেন্দ্র সরকারের কাছে তার কোনও মূল্যই নেই।’ নোটবন্দি নিয়েও বিজেপি সরকারকে একহাত নেন ঘাটালের বিদায়ী সাংসদ। তাঁর কথায়, ‘নোটবন্দির ক্ষত মানুষ ভুলতে পারেননি। নোটবন্দির জন্য সারা দেশের ১ কোটি মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ৭ বছরে ১ কোটি মানুষের চাকরির ব্যবস্থা করেছেন। ‘বেটি বঁচাও বেটি পড়াও’ প্রকল্পে কেন্দ্র ২৯টি রাজ্যের জন্য বরাদ্দ করেছে ৬৫০ কোটি টাকা। আর আমাদের রাজ্য সরকার কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করেছে ৭ হাজার কোটি টাকা। তফাতটা আপনারাই করুন। বিচার করুন, কোন সরকার ভাল কাজ করছে। কাজের নিরিখে, উন্নয়ন দেখে ভোট দিন আপনারা।’