‘গত ৮ বছর ধরে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী থাকার সুবাদে এই জেলার জন্য প্রচুর কাজ করেছি। তাই আমি কিন্তু আপনাদের জন্য অনেক কাজ করার পরই ভোট চাইতে এসেছি।’ বুধবার জঙ্গলমহলের রাইপুরে এক কর্মীসভায় এ কথা বলেই দলের কর্মী-সমর্থক ও স্থানীয় মানুষের মন জয় করে নেন বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী ও রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
সাধারণত ভোটের সময় অন্য প্রার্থীরা আগে প্রতিশ্রুতি দেন, তারপর ভোটে জিতলে অঞ্চলের কাজ করেন। কিন্তু এক্ষেত্রে তিনি যে ব্যতিক্রমী, তা স্পষ্ট করে দিয়ে সুব্রত বলেন, ‘ভোটের সময় আপনাদের কাছে অনেক দলের অনেক প্রার্থী আসবেন। নানা প্রার্থী নানা রকম প্রতিশ্রুতি দেবেন। এরপর ভোটে জেতার পর তাঁদের টিকিটিও আপনারা দেখতে পাবেন না। আমি এক্ষেত্রে পুরোপুরি ব্যতিক্রমী। গত ৮ বছর ধরে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী থাকার সুবাদে এই জেলার জন্য প্রচুর কাজ করেছি আমি।’ এরপর তিনি তাঁর কাজের খতিয়ান তুলে ধরেন। যার মধ্যে অবশ্যই উল্লেখযোগ্য শতাব্দীপ্রাচীন পানীয় জল সমস্যার সমাধান।
বুধবার ছিল সুব্রতর জঙ্গলমহল এলাকার ব্লকগুলিতে দ্বিতীয় দিনের প্রচার। গতকাল তিনি রাইপুর ব্লকে দুটি কর্মিসভা ও সারেঙ্গা ব্লকে একটি কর্মিসভা করেন। রাইপুর ব্লকে প্রথম কর্মিসভাটি করেন ফুলকুসমাতে এবং পরেরটি করেন হলুদকানালিতে। তাঁর সঙ্গে প্রচারে ছিলেন দলের জেলা সভাপতি অরূপ খাঁ, যুবনেতা রাজীব ঘোষাল, জেলা কমিটির কার্যকরী সভাপতি জয়ন্ত মিত্র প্রমুখ। তিনি যেখানে গিয়েছেন, সেখানেই তাঁকে নিয়ে ছিল এলাকার মানুষের প্রবল উন্মাদনা।
সকলের সামনেই সুব্রত এ কথা স্পষ্ট করে দেন, ‘বাঙালি দেশের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ পদই দখল করতে পেরেছেন। এবার প্রধানমন্ত্রী পদেও বাঙালি বসার সম্ভাবনা রয়েছে।’ গতকাল কেন্দ্রের বিজেপি সরকারেরও তীব্র সমালোচনা করেন সুব্রত। তাঁর কথায়, ‘উন্নয়ন নয়, সাম্প্রদায়িকতাই ওদের ভোটযুদ্ধের আসল অস্ত্র। ওরা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে ভেদাভেদ সৃষ্টি করে। তাদের মধ্যে অবিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি করে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করে। সর্বধর্ম সমন্বয়ের দেশ ভারতবর্ষ। তাই ওদের হাতে ভারত সুরক্ষিত নয়।’
এরপরই কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি সরাসরি প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, ‘আপনারা কী চান? আগামী ১৫ আগস্ট দিল্লির লালকেল্লায় পতাকা তুলুন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?’ প্রশ্নের উত্তরে কর্মী ও সমর্থকরা ব্যাপক উল্লাসের সঙ্গে চিৎকার করে জানিয়ে দেন, তাঁরা চান লালকেল্লায় পতাকা তুলুন বাংলার বাঘিনী মমতাই। উত্তর শুনে সন্তুষ্ট সুব্রতর কর্মীদের নির্দেশ দেন, ‘এই বার্তাই এবার নিজেদের এলাকার প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।’