সাম্প্রদায়িকতা এবং কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন মানুষকে সঙ্গে নিয়ে করতে হয়। যেটা তারা বরাবরই করে এসেছে। তাই ধর্মঘট করে তৃণমূলকে প্রমাণ করতে হয় না তারা সাম্প্রদায়িকতা ও বিজেপির বিরোধী। পাশাপাশি, কীভাবে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের জনবিরোধী নীতির প্রতিবাদ জানাতে হয়, তাও তাদের শেখানোর প্রয়োজন নেই। আগামী ৮ ও ৯ তারিখের ধর্মঘটের বিরোধিতা প্রসঙ্গে এভাবেই সাফ জানিয়ে দিল রাজ্যের শাসক দল।
কেন্দ্রের আর্থিক ও শ্রমনীতির বিরোধিতায় ধর্মঘট কোনও উপায় হতে পারে বলে তারা মনে করে না। ধর্মঘট করে রাজ্যকে অচল করতে দেওয়া হবে না এ কথা বারবারই বলে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারও ধর্মঘটের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপই নিচ্ছেন তিনি। ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক স্তরে ওই দু’দিন জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে যেমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তেমনই রাজনৈতিভাবে ধর্মঘটের কর্মনাশা সংস্কৃতির মোকাবিলায় তৎপর রয়েছে তৃণমূল।
সঙ্ঘ পরিবারের ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ (বিএমএস) বাদে দেশের সমস্ত কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন ও কর্মচারী ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বারো দফা দাবিতে দু’দিনের সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। তবে বাংলায় শাসক দল এই ধর্মঘটের তীব্র বিরোধিতা করেছে। রবিবার তৃণমূলের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, দু’দিনের ধর্মঘট করে বাংলাকে অচল করতে দেওয়া হবে না। কারণ ধর্মঘট কর্মনাশা। তাতে স্বাভাবিক জনজীবন যেমন ব্যাহত হয়, তেমনই টান পড়ে সাধারণ মানুষের রুজি-রুটিতে।
ধর্মঘটের বিরোধিতা করে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় গতকাল বলেন, আমাদের নেত্রী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোটা দেশের কাছে বিজেপি বিরোধিতার প্রধান মুখ। সাম্প্রদায়িকতা এবং কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন যে মানুষকে সঙ্গে নিয়েই করতে হয়, তা দেখিয়ে দিয়েছেন নেত্রী। তাই তৃণমূলকে ধর্মঘট করে বিজেপি বিরোধী অবস্থান প্রমাণ করতে হয় না।
তবে এখানেই শেষ নয়। পূর্বতন বাম সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি আরও বলেন, প্রায় সাড়ে তিন দশক জুড়ে বাংলার উন্নয়নে যারা নজর দেয়নি, শুধুমাত্র সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ধর্মঘটের মতো কর্মনাশা সংস্কৃতি যারা আমদানি করেছিল, তারা আজ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া। সেটাকে আড়াল করতেই তাই সেই পুরনো সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে রাজ্য সেটা হতে দেবে না।
পার্থবাবু স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ইতিমধ্যেই রাজ্য প্রশাসন জনজীবন স্বাভাবিক রাখার প্রশ্নে তৎপর হয়েছে। তাঁদের দলও রাজনৈতিকভাবে এই ধর্মঘটের মোকাবিলায় তৈরি। কোনও মতেই রাজ্যের উন্নয়নের ধারা ব্যাহত হতে দেবে না রাজ্যবাসী। তাঁর দাবি, ৩৪ বছরের কর্মনাশা সংস্কৃতি দূর করে বাংলাকে উন্নয়মুখী করে তুলতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আমজনতা যখন তাদের আস্থা প্রকাশ করেছে, তখন একদিকে দাঙ্গাবাজ, অন্যদিকে ধর্মঘটীরা একযোগে বাধা দিতে চাইছে। কোনও মতেই তা বরদাস্ত করা হবে না।