গরুরা নিশ্চিন্তে থাকলেও সুরক্ষিত নেই যোগীর রাজ্যের মানুষ। প্রতি মুহূর্তে ঘটে চলা নানা হিংসাত্মক ঘটনার ফলে প্রাণ সংশয়ে ভুগছেন উত্তরপ্রদেশবাসী। এখনও ক্ষোভের আগুন নেভেনি বুলন্দশহরে। এরমধ্যেই ফের গাজিপুরে পাথর ছুঁড়ে খুন করা হল কনস্টেবল সুরেশ ভাটকে। শনিবার নিহত ওই কনস্টেবলের ছেলে রাজ্য পুলিশের ওপর ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে জানান, পুলিশ নিজেদেরকেই সুরক্ষা দিতে অক্ষম, সাধারণ মানুষকে কি করে সুরক্ষা দেবে?
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনসভায় ডিউটি সেরে ফেরার পথে নিষাদ পার্টির অবরোধের মুখে পড়েন সুরেশ। সেখানেই গুণ্ডাদের ছোঁড়া পাথরের আঘাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। পুলিশ জানিয়েছে, নিষাদ পার্টি ওদিন সরকারি চাকরি ও কলেজে ভর্তির জন্য তাদের দলের সংরক্ষণ পাওয়ার দাবিতে গোটা রাজ্য জুড়ে অবরোধে নামে। সেই সময় পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলেই গন্ডগোল বেধে যায়৷ যার বলি সুরেশ।
এই ঘটনায় পুলিস ইতিমধ্যেই ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে এবং বেশ কিছুজনকে আটক করেছে। এফআইআরে ৩২ জনের নামের পাশাপাশি ১০০ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকেও রাখা হয়েছে। তবে যা হওয়ার তা হয়েই গেছে। পুলিশ যে পুলিশকেই সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ তা আবারও প্রমাণিত। যার ফলে আবারও মুখ পুড়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকারের।
এই প্রসঙ্গেই সুরেশ ভাটের পুত্র ভিপি সিং শনিবার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘পুলিশ নিজেদের সুরক্ষা দিতেই অক্ষম। তাহলে তাদের থেকে আমরা কী আশা করব? আমরা ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়েও বা কী করব? এর আগেও বুলন্দশহরে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।’ এ মাসে একই ধরনের ঘটনা দু’বার ঘটল। এর আগে ৩ ডিসেম্বর বুলন্দশহরে গোরক্ষাকারীদের হাতে মরতে হয়েছিল ইন্সপেক্টর সুবোধ কুমার সিংকে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক পুলিশ কর্মী বলেন, ‘আমরা অবরোধ থামানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু তারা শোনেনি। বরং অবরোধকারীরা আমাদের লক্ষ্য করে ইঁট-পাথর ছুঁড়তে শুরু করে। আমাদের ৩ কর্মী আহত হন এবং সুরেশকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়।’
বুলন্দশহরের ঘটনা নিয়ে এখনও বিতর্কের শিরোনামে যোগী, তার ওপর আবারও পুলিশ খুনের ঘটনায় নতুন করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। ইতিমধ্যেই আসরে নেমে পড়েছে বিরোধীরা। কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা বলেন, ‘আদিত্যনাথের জঙ্গলরাজ চলছে, যেখানে সাধারণ মানুষ থেকে পুলিস কেউ সুরক্ষিত নয়।’ সকলেরই এক প্রশ্ন, আর কতজন পুলিশ কর্মীকে এভাবে হিংসার বলি হতে হবে? আর কতদিনই বা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হবে উত্তরপ্রদেশবাসীকে?