গোটা বাংলা জুড়ে উন্নয়নের আলো ছড়িয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাম আমল থেকে বারবার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে উদয়নারায়ণপুর। কখনও কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দলের কর্মীদের হাত কেটে নেওয়ার অভিযোগ, তো কখনও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে খুনের ঘটনা। আবার কখনও তৃণমূল করার অপরাধে এক কর্মীর গলায় জ্যান্ত কই মাছ ঢুকিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। তবে মমতা বদলে দিয়েছেন সব। শান্ত হয়েছে তপ্ত উদয়নারায়ণপুর। এখন বিরোধীদের দেখাই যায় না এখানে। একচেটিয়া প্রচারে ঝড় তুলছে তৃণমূল। জয় তাই শুধু সময়ের অপেক্ষা।
উদয়নারায়ণপুর পঞ্চায়েত সমিতির ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও আমতা ১নং ব্লকের পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত—সবমিলিয়ে ১৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে এই বিধানসভা। আমতা-জয়পুর রোড থেকে সেহেরাগোড়ী মোড় হয়ে ডান দিকে এগলেই উদয়নারায়ণপুর ব্লকে যাওয়ার রাস্তা। কালো চওড়া রাস্তার দু’ধারে ধান জমি। যে দু’একটি দেওয়াল রয়েছে, সেখানেও তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে প্রচার। ধান জমিতেও পতপত করে উড়ছে তৃণমূলের ঝান্ডা। দু’-একটি জায়গায় বিজেপির পতাকা টাঙানো থাকলেও তা এতই সামান্য যে, চোখে পড়া কঠিন। বিজেপির দেওয়াল লিখনই নেই।
ওই রাস্তা দিয়ে আট কিলোমিটার এগলেই গড় ভবানীপুর। এই গ্রামেই বাড়ি এখানকার বিধায়ক সমীর পাঁজার। গোটা গ্রামে নিজের ‘দাপট’ ধরে রেখেছেন সমীরবাবু। তাঁর যুক্তি, এখানে বিরোধী দল করার লোক কোথায়? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর এই ব্লক ও আশপাশের এলাকার যা উন্নয়ন হয়েছে, তাতে আর কেউ বিরোধী দল করার কথা ভাবতেও পারছেন না। তাই এখানে একপেশে প্রচার দেখতে পাচ্ছেন।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী সমীর পাঁজা ৫২.১২ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন। অন্যদিকে সিপিএম-কংগ্রেসের জোট প্রার্থী সরোজরঞ্জন কাঁড়ার পেয়েছিলেন ৩৯.০৬ শতাংশ ভোট। বিজেপি প্রার্থী পেয়েছিলেন মাত্র ৪.৫৯ শতাংশ ভোট। যদিও গত বছর লোকসভার উপনির্বাচনে সমীকরণ সম্পূর্ণ বদলে যায়। এই কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থী সাজদা আহমেদ ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৫২৩ ভোটে এগিয়েছিলেন।