বাংলায় বিজেপি বিরোধী ভোট যাতে কোনও ভাবে ভাগাভাগি হয়ে বিজেপির সুবিধা না-হয়, সেই জন্য বারে বারেই ভোটারদের সতর্ক করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে তৃণমূলকে ঠেকাতে তলে তলে কংগ্রেস, সিপিএম এবং বিজেপি একজোট হয়ে লড়াইয়ে নেমেছে বলে অভিযোগ করে অতীতের বাম দূর্গ রায়না থেকে মমতা বলেন, ‘সিপিএমের হার্মাদরাই এখন বিজেপির ওস্তাদ। রাজনৈতিক ভাবে লড়তে না-পেরে কংগ্রেস, সিপিএম ও বিজেপি একসঙ্গে নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী করতে চাইছে। আর আমরা মানুষকে সঙ্গে নিয়ে মোদীকে হটানোর লক্ষ্যে স্থির’।
একই সঙ্গে কংগ্রেস-বিজেপির গোপন সম্পর্কের অভিযোগ তুলে বাম কর্মী-সমর্থকদের কাছে মমতার আবেদন, ‘এখনও যাঁরা বামপন্থী দল করেন, দয়া করে তাঁরা বিজেপির কাছে নিজেদের বিক্রি করবেন না’। পাশাপাশি বিজেপি-বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলিকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূলই কেন্দ্রীয় সরকার গঠনে নেতৃত্ব দেবে বলে জানিয়ে দেন আত্মবিশ্বাসী মমতা। বাংলার ৪২ টি কেন্দ্রের মধ্যে সব ক’টিই তৃণমূল পেলে কেন্দ্রে সরকার গঠনে তারাই অগ্রণী ভূমিকা নেবে বলে আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মমতা। বর্ধমানে তিনটি নির্বাচনী সভার মধ্যে পূর্বস্থলীতে তারই পুনরাবৃত্তি করে মমতা বলেন, ‘বাংলাই দিল্লী দখল করবে। আগামী দিনে যে সরকার হবে, আমরাই সবাইকে নিয়ে তা তৈরি করব।’
উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশের মতো বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ‘ভাল’ বলে আগেই জানিয়েছেন মমতা। সেই সূত্রেই এই রাজ্যগুলির প্রধান দলকে সঙ্গে নিয়ে তিনিই আগামী লোকসভা তৈরিতে অন্যতম নিয়ন্ত্রক হবেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। প্রসঙ্গত, বিজেপি বিরোধী জোটের অন্যতম আহ্বায়ক ছিলেন মমতাই। তাঁরই আহ্বানে গত ১৯ জানুয়ারি কলকাতার ব্রিগেডে দেশের তাবড় আঞ্চলিক দলগুলির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত হয়েছিলেন। কংগ্রেসও সেই মঞ্চে উপস্থিত হয়ে বিজেপি-বিরোধী লড়াইয়ে একজোট হওয়ার বার্তা দিয়েছিল। তার পর দিল্লী-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিজেপি-বিরোধী শক্তিগুলিকে একজোট করার প্রক্রিয়ায় অন্যতম প্রধান ভূমিকা ছিল তাঁর। আঞ্চলিক দলগুলির শক্তিবৃদ্ধিতে জোর দিয়ে রাজ্যেও একশ শতাংশ আসনে জয়ের স্লোগান দিয়েছিলেন মমতা।প্রথম তিন দফার ভোটের প্রচারে বারবার সে কথাই জানিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী।