বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর ‘সবুজসাথী’ প্রকল্পে রাজ্যের প্রায় ৫০ লক্ষ পড়ুয়া বাইসাইকেল পেয়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলাতেই সংখ্যাটা ২ লক্ষের ওপর। শহরের পিচঢালা রাস্তায় বা গ্রামের মেঠো অথবা ঢালাই পথ বেয়ে সার সার ‘সবুজসাথী’ এখন স্কুলমুখী। রাজ্যজুড়ে যেন প্রকৃত ‘সবুজের অভিযান’ শুরু হয়েছে সাইকেলের প্যাডেলে চাপ দিয়ে। আর তাই মমতা বন্দোপাধ্যায়কে দু’হাত ভরে আশীর্বাদ করছেন হারু, বাপি, কেরামত, সুনীল, গণেশরাও। এরা কেন আশীর্বাদ করবেন না, কারণ মুখ্যমন্ত্রীর জন্যই তো তাঁদের রুজিরুটি বাঁচল। সাইকেল মেরামত করে তাঁদের দিন যেত। কিন্তু সাইকেল ব্যবহার দিন দিন কমতে থাকায় তাঁদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল। কিন্তু সবুজসাথী প্রকল্পের জন্য তাঁদের অনেক উপকার হল। “এই প্রকল্প আমাদের জীবিকায় বাড়তি আয় জোগাল বলতে পারেন। মমতাদিদি বেঁচে থাকুন” বলে কপালে হাত ঠেকান সুনীল।
যে সব সাইকেল মেকানিকের বয়স কম, তাঁরা বাইক মেরামতির দিকে ঝোঁকা শুরু করেছিলেন। কিন্তু দিন ফিরেছে। কাটোয়া–করুই বাসরাস্তার রায়েরপাড়া বাসস্ট্যান্ডের সাইকেল মেকানিক হারু পাত্রর কথায়, “সাইকেল সারানোর পাশাপাশি মোটরবাইকের লিক সারাচ্ছি। বাড়তি দু’পয়সা হচ্ছে”। পঞ্চাননতলা বাসস্ট্যান্ডের বাপি মিস্ত্রির খেদ, “সাইকেল সারাতে ক’জন আসে! সবাই তো দেখছি বাইক কিনছে। বাইক মেরামতির দোকানও তাই বাড়ছে। কপাল পুড়েছিল আমাদের। ব্যবসা গুটিয়ে দেওয়ার কথাই ভেবেছিলাম। কিন্তু আমাদের জীবনে পরিবর্তন এনেছে সবুজসাথী। সবুজসাথীর সাইকেল আমাদের বাঁচিয়ে দিল”।
তথ্য বলছে, পূর্ব বর্ধমান জেলার হাজার দশেকের ওপর মানুষ সাইকেল মেরামতি করে সংসার চালান। রাজ্যের ক্ষেত্রে সংখ্যাটি তিন লক্ষ ছুঁইছুঁই। সবুজসাথী প্রকল্প তাঁদের সংসার থেকে মুছে যাওয়া সুখ ফিরিয়েছে। প্রয়াত কর্কপ্যাট্রিক ম্যাকমিলান, সবুজসাথীর লক্ষ লক্ষ উপভোক্তা আর মেকানিকদের সুখের দিন ফিরিয়ে দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সবুজসাথী ফিরিয়েছে সেইসব সোনালি অতীত।