[Total_Soft_Poll id=”2″]
ক্যালেন্ডার বলছে বাকি আর মাত্র ১ দিন। তবে হাতে আর ২৪ ঘন্টাও বাকি নেই। আগামীকাল থেকেই শুরু হতে চলেছে সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন। কিন্তু ভোটের মাত্র ৪৮ ঘন্টা আগে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে আবারও রদবদল হল রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনে। এবার সরানো হল কোচবিহারের পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্তাকে। এভাবে রাজ্যের এক এসপিকে আচমকা বদলি করায় ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তৃণমূলের মহাসচিব তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তিনি সরাসরি অভিযোগ করেছেন, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নয়। কমিশনকে দলদাসে পরিণত করার চেষ্টা করছে বিজেপি।
গতকাল রাতে ওই বদলির প্রতিবাদ জানিয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। তিন পাতার চিঠিতে ডেরেক লিখেছে, ‘ভোটের দু’দিন আগে কোচবিহারের পুলিশ সুপারকে বদলি করার নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, পক্ষপাতমূলক। গত কয়েক দিনের বদলির ঘটনা লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে, এগুলাে কেন্দ্রের শাসন ক্ষমতায় থাকা দল ও দলের নেতাদের নির্দেশে হচ্ছে। একই সঙ্গে দলের রাজ্য প্রতিনিধিদের ভূমিকাও থাকছে। সম্প্রতি এক নির্বাচনী সভায় কোচবিহারে বিজেপির নেতা যে মন্তব্য করেছেন, সে-ব্যাপারে অভিযােগ জানানাে সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’
চিঠিতে তিনি এ কথাও লিখেছেন যে, ‘বিজেপি নেতারা, বিশেষ করে মুকুল রায় কোচবিহারের পুলিশ সুপারকে প্রকাশ্যে প্রধানমন্ত্রীর সামনে হুমকি দিয়েছেন। তাকে বদলি করে দেওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। ভাবখানা এমন যে, নির্বাচন কমিশনে তাঁদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে মনে হচ্ছে, দুই নেতার নির্দেশেই এই সিদ্ধান্ত। আমরা বাধ্য হচ্ছি এই সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে।’ আর চিঠির শেষে ডেরেক লেখেন, ‘বিভিন্ন ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সংবিধানের স্বাতন্ত্র্য রক্ষার আবেদন জানাচ্ছি। এবং সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার কথা বলছি। আশা করি, নির্বাচনের এই গুরুত্বপূর্ণ পর্বে ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে অবাধ, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন যা কোনও রাজনৈতিক দলের প্রভাবমুক্ত।
গতকাল পার্থ বলেন, ‘মুকুল রায় ও দিলীপ ঘোষের অভিযোগে প্রভাবিত হয়ে নির্বাচন কমিশন এই কাজটা করল। কারণ দিলীপ বলেছিলেন, বদলির তালিকা নাকি আরও বড় হবে। এটা সত্যিই লজ্জার। মুকুল ও দিলীপ যে সব মন্তব্য করেছেন, তা কি নির্বাচনী বিধি ভঙ্গের মধ্যে পড়ে না? যত দোষ আমাদের?’ এরপরই তাঁর অভিযোগ, ‘নির্বাচন কমিশনকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলছি, তারা যে নিরপেক্ষ নয়, এটা প্রমাণিত হয়ে গেল। এটা কি ভাল লক্ষণ? মানুষই এর জবাব দেবেন। আমাদেরও বহু অভিযােগ রয়েছে। সে সব নিয়ে তাে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না!’
[Total_Soft_Poll id=”3″]
তিনি আরও বলেন যে, ‘বাংলায় বিজেপি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চাইছে। বিভেদের রাজনীতি শুরু করেছে। এতে ওদের কোন লাভ হবে না। বাংলা থেকে এবার আর একটি আসনও পাবে না ওরা। দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছি। কিন্তু কখনও বিজেপির অঙ্গুলিহেলনে নির্বাচন কমিশনকে এভাবে কাজ করতে দেখিনি।’ উল্লেখ্য, এর আগে কলকাতার নগরপাল-সহ কয়েকজন পুলিশ আধিকারিককেও বদলি করা হয়েছে। তারপরই বাংলার
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘বদলি করে কোনও লাভ হবে। মোদী এবার হারবে। দিল্লীতে নতুন সরকার তৈরি হবে। ভাগাভাগির রাজনীতি বন্ধ হবে।’ নির্বাচন কমিশনকে কড়া ভাষায় চিঠি লিখে প্রতিবাদও জানান মমতা।