লোকসভা ভোটের আগে দেশের রাজনীতি যখন পুরোদস্তুর দ্বৈরথে ব্যস্ত, সেই সময় আবারও এক ঝলক টাটকা বাতাসে নিয়ে এল টলিউড সুপারস্টার ও ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী দীপক অধিকারী তথা দেব। প্রতিপক্ষের নাম জানা মাত্রই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৌজন্যের রাজনীতিকেই হাতিয়ার করলেন তৃণমূলের এই অভিনেতা-সাংসদ। বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষের অস্বস্তি বাড়িয়ে মনে করিয়ে দিলেন, পুরানো সেই দিনের কথা!
কানাঘুষো ছিলই। তা সত্যি করে দোলের সন্ধ্যায় ঘাটাল লোকসভায় তৃণমূলের দেবের বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে ঘোষিত হয় পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের নাম। তা জানার পরই ফেসবুকে দেব লেখেন, ‘বিজেপি প্রার্থী শ্রীমতী ভারতী ঘোষকে শুভেচ্ছা। উনি আমাদের জেলার এসপি ছিলেন…জেতা-হারা পরের কথা, আমরা সবাই মিলে আগামী দিনে ঘাটালে উন্নয়নের কাজ চালিয়ে যাব’।
প্রসঙ্গত, একদা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ ছিলেন ভারতী। কিন্তু পরে নিজের কৃতকর্মের ফলে ক্রমশই মুখ্যমন্ত্রীর চক্ষুশূল হয়ে ওঠেন। দিন কয়েক আগেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন ভারতী। পরিবর্তে মিলেছে লোকসভার টিকিট। ফলে বিজেপির হয়ে প্রচারে তিনি যে রাজ্য সরকারকে বিঁধবেন, তা বলাই বাহুল্য। তাই আগেই প্রাক্তন এসপি-কে তাঁর অতীত মনে করিয়ে দেব প্রতিপক্ষকে ‘অস্বস্তি’তে রাখলেন বলে মত তৃণমূলের একাংশের।
যদিও অন্য অংশের ব্যাখ্যা, বিপক্ষের প্রতি সৌজন্য দেবের ‘ট্রেডমার্ক’। কারণ সিপিআই প্রার্থী তপন গঙ্গোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যেও দেব টুইটে লিখেছিলেন, ‘ঘাটালে সিপিআই প্রার্থী শ্রী তপন গঙ্গোপাধ্যায়কে অভিনন্দন। আমরা যেই জিতি বা হারি সবাই একসঙ্গে ঘাটালের মানুষজনের সুখ দুঃখের সঙ্গে থাকব। ঘাটালের উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করব। আমাদের মতবিরোধ যেন উন্নয়নের অন্তরায় না হয়।’
উল্লেখ্য, ভারতী ঘাটালেরই দাসপুরের প্রতারণা মামলায় অভিযুক্ত। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের দাবি, এমন এক জনকে প্রার্থী করা হয়েছে যিনি নিরাপরাধ প্রমাণিত হননি। তার ওপর যেখানে গোলমালের শুরু, সেই ঘাটালেই ভারতীকে প্রার্থী করা হয়েছে। এ সব বিজেপির বিপক্ষে যাবে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘উনি (ভারতী) প্রার্থী হওয়ার আমাদের সুবিধে হল। বিজেপির বহু কর্মী আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন।’ তবে ভারতীকে প্রার্থী করা নিয়ে বিজেপির ব্যাখ্যা, এই এলাকা তিনি হাতের তালুর মতো চেনেন। তাঁর ‘নেটওয়ার্ক’ এখনও শক্তিশালী।