একদিকে শান্তির কথা বলছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছেন। অন্যদিকে পাকিস্তানের নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠনের নেতাকে নিজের দলেও নিতেও আপত্তি করছেন না পাক প্রধানমন্ত্রী। ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এ যোগ দিয়েছেন হরকত উল মুজাহিদিন নেতা মওলানা ফজলুর রহমান খলিল। আজ বৃহস্পতিবারই দলের তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘোষণা করেছে পিটিআই।
পিটিআই নেতা আসাদ উমর বৃহস্পতিবারই একটি ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, হরকত-উল –মুজাহিদিন শীর্ষ নেতা মওলানা ফজলুর রহমান খলিলকে তাঁদের দলে নেওয়া হয়েছে। ইমরান খানের নীতি-আদর্শকে সমর্থন করে দলে যোগ দিয়েছেন খলিল। আসাদ উমরের এই ঘোষণার পরই আন্তর্জাতিক মহলে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। আমেরিকার ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের তালিকায় প্রথম সারিতে থাকা এক জন জঙ্গি নেতাকে কী ভাবে ইমরান নিজের দলে জায়গা দিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
হরকত-উল-মুজাহিদিনের প্রতিষ্ঠাতা এবং শীর্ষনেতা খলিল। মার্কিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ঘোষিত নিষিদ্ধ জঙ্গি গোষ্ঠীর তালিকায় এই হরকত-উল-মুজাহিদিন উপরের দিকেই রয়েছে। এই খলিল আবার ওসামা বিন লাদেনের ঘনিষ্ঠ। লাদেন যখন পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে ছিলেন, সেই সময় তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল খলিলের। পাশপাশি পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তানে প্রশিক্ষিত জঙ্গিদের পাঠিয়ে নাশকতা চালানোর অভিযোগ রয়েছে এবং এই অভিযোগে ২০০৪ সালে পাক সরকার তাকে গ্রেফতারও করে। যদিও প্রমাণের অভাবে তাকে পরে ছাড়া পেয়ে যায় খলিল। ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান-সহ উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে নাশকতামূলক কাজকর্ম চালানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এর মধ্যে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাংবাদিক ড্যানিয়েল পার্লকে গলা কেটে হত্যা করেছিল এই হরকত উল মুজাহিদিন-ই।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভারতীয় বায়ুসেনারা কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে ফিরিয়ে দিয়ে শান্তির দূত বলেও নিজেকে জাহির করার চেষ্টা করছেন ইমরান। অথচ তাঁরই দলে এরকম কুখ্যাত জঙ্গিকে দলে নিয়ে সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার বহুচর্চিত অভিযোগকেই কার্যত সীলমোহর দিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী।