গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামা হামলার ফলে ক্ষোভের আগুনে ফুটছিল গোটা দেশ। ৪৪ জওয়ানের মৃত্যুর পর তাঁদের এই আত্মত্যাগের মর্যাদা রাখার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছিলেন তাঁদের সহকর্মীরা। মঙ্গলবার ভারত প্রত্যাঘাত করে আকাশপথে, বোমা বর্ষণ করে জঙ্গী ঘাঁটি ধ্বংস করে, তারপর থেকেই উত্তপ্ত সীমান্ত। এতবড় হামলার পরে স্থির করা হয় ভারতের মাটিতে জঙ্গি কার্যকলাপ করতে যে টাকা আসে, তার সাপ্লাই কেটে দেওয়া। জঙ্গিরা যদি আর্থিক সুবিধা না পায়, তাহলে তাদের পক্ষে পুলওয়ামার মতো হামলা করা সম্ভব হবে না। এই কাজ করতে গিয়েই আয়কর হানায় উদ্ধার করা হল জঙ্গীদের অর্থসাহায্যের গুরুত্বপূর্ণ নথি, তিনটি হার্ড ডিস্কও
পরিকল্পনামাফিক বুধবার আয়কর দফতরের বিশেষ দল দিল্লির তিন ও কাশ্মীর উপত্যকার চার জায়গায় হানা দেয়। তাঁদের কাছে খবর ছিল, এই জায়গাগুলি থেকে একটি বিশেষ সংস্থা মারফত জঙ্গিদের কাছে আর্থিক সাহায্য পাঠানো হয়। সূত্রের খবর, এই জায়গাগুলি একটি নামকরা সংস্থার অধীনে রয়েছে। এই সংস্থার মাধ্যমে ভারতে ‘টেরর ফান্ডিং’ করা হয়ে থাকে।
সূত্রের খবর, এই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন জায়গায় হানা দিয়ে আয়কর দফতরের হাতে অনেক তথ্যপ্রমাণ এসেছে। হিসেব বহির্ভুত একটা বড় টাকা বিভিন্ন কাজে লাগাত এই সংস্থা। বিভিন্ন ধরণের ব্যবসার নাম করে এই টাকা লাগানো হতো।” তদন্তের স্বার্থে এখনও পর্যন্ত ওই সংস্থার নাম জানানো হয়নি আয়কর দফতরের তরফে।
এই হানায় তিনটে হার্ড ডিস্কও পেয়েছেন আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। আধিকারিকরা মনে করছেন, এই হার্ড ডিস্কগুলির মধ্যে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য থাকতে পারে। এছাড়াও কীভাবে ওই টাকার মাধ্যমে কাশ্মীর উপত্যকায় জঙ্গিদের অর্থ সাহায্য করা হতো, সেই ব্যাপারেও কিছু তথ্য থাকতে পারে ওই ডিস্কে। আপাতত ডিস্কগুলিকে খতিয়ে দেখছেন আধিকারিকরা। এই সার্চ অপারেশনের সময় একটা বিপুল পরিমাণ টাকার উল্লেখ পাওয়া গিয়েছে, যা বিভিন্ন সময় ট্রান্সফার হয়েছে। এই ট্রান্সফার প্রধানত ক্যাশের মাধ্যমে হয়েছে। কিন্তু এই টাকার বদলে কোনও আয়কর দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ ঠিক কাদের ওই টাকা দেওয়া হয়েছে, তার কোনও উল্লেখ নেই। কিন্তু টাকা যে দেওয়া হয়েছে, তার প্রমাণ আছে। ৪৪ জন জওয়ান প্রাণের বিনিময়ে ভারতের মাটি থেকে জঙ্গীদের কার্যকলাপ থামানোর জন্যে উদ্বুদ্ধ করে গেলেন সকলকে।