তৃণমূলের মহাসচিব তথা ঝাড়গ্রাম জেলার পর্যবেক্ষক পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঝাড়গ্রাম জেলার নেতাদের কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “হয় কাজ করুন না হয় পদ ছাড়ুন”। গতকাল বিকেলে শহরের দেবেন্দ্রমোহন হলে তৃণমূলের জেলা কোর কমিটির বৈঠক করেন পার্থ৷ ওই বৈঠকে বিনপুরের বিধায়ক ছাড়া জেলার সমস্ত বিধায়ক, সাংসদ সহ মোট ৬০ জন উপস্থিত ছিলেন৷ পঞ্চায়েত ভোটের পর ঝাড়গ্রামে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা কমিটি ভেঙে দিয়ে কোর কমিটি তৈরি করেছিলেন৷ কোর কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয় ঝাড়্গ্রামের বিধায়ক সুকুমার হাঁসদাকে। জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাতে৷ সে সময় ঝাড়গ্রামে এসে এলাকার সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে বুথ কমিটি গঠন করে ব্লক সভাপতিদের মাধ্যমে জেলার কোর কমিটির চেয়ারম্যানের কাছে সেই তালিকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন পার্থ৷
গোপীবল্লভপুর ১ ও ২ ব্লকের দু’জন ব্লক সভাপতি বাদ দিয়ে বাকি ৬টি ব্লকের সভাপতিরা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বুথ কমিটির হিসেবের তালিকা জমা দিয়েছেন৷ গোপীবল্লভপুর ১ ব্লক সভাপতি শঙ্কর হাঁসদা এবং গোপীবল্লভপুর ২ ব্লক সভাপতি টিঙ্কু পাল বলেন, “নতুন দায়িত্ব পেয়েছি, তাই সম্পূর্ণ হয়নি”। তাদের থামিয়ে দিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এই দুটি ব্লকে দলীয় কর্মীরা নিজেদের মধ্যে বসবেন৷ অধিক সংখ্যক কর্মী যাকে চাইবেন তাকেই সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হবে”। এদিনের কোর কমিটির বৈঠকে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ঝাড়গ্রাম লোকসভার ‘রণকৌশল’ স্থির করে দেন তৃণমূলের মহাসচিব। পার্থ জেলার বিধায়কদের উদ্দেশ্যে বলেন, “লোকসভা নির্বাচনের ফল না বের হওয়া পর্যন্ত বিধায়করা নিজের নির্বাচনী এলাকা ছেড়ে কোথাও যাবেন না৷ এই মুহূর্তে আপনাদের কলকাতায়ও যেতে হবে না”। সেই সঙ্গে প্রত্যেক বিধানসভার এলাকা ভিত্তিক একটি করে নির্বাচনী কমিটিও তৈরি করে দিয়েছেন তিনি।
জামবনি পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনের ‘বিশৃঙ্খলা’ নিয়েও অর্জুন হাঁসদাকে সতর্ক করে দিয়েছেন পার্থ৷ ব্লক সভাপতিদেরও তিনি নির্দেশ দেন, “পঞ্চায়েতে স্থায়ী সমিতি গঠন নিয়ে কোনও দ্বন্দ্ব রাখা যাবে না”। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ক্ষুব্ধ হয়ে সুকুমার হাঁসদাকে বলেন, “বিশৃঙ্খলা কোনওমতেই বরদাস্ত করা হবে না৷ কঠোর ভাবে হাল ধরতে হবে৷ অন্যথায় পদ ছাড়তে হবে৷ বাড়িতে বসে থাকলে চলবে না”। ঝাড়গ্রামের দায়িত্ব নেওয়ার পর পার্থ চট্টোপাধ্যায় বুঝতে পারেন দলীয় সংগঠন তেমন বিস্তার করছে না৷ জেলায় ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ দেখা দিচ্ছে৷ জেলা কোর কমিটির চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা ‘পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের’ চেয়ারম্যান ছিলেন৷ তিনি আবার বিধানসভার ডেপুটি স্পিকারেরও দায়িত্ব পেয়েছেন৷ ফলে জেলায় গঠনগত কাজকর্মে গতি পাচ্ছে না পার্থ বাবুকে এমনটাই জানান দলীয় নেতারা। যেখানে দলীয় সংগঠন ভালো করে কাজ করতে পারছে না,সেখানে দলের ছাত্র-যুবদের বেশি করে কাজ করার পরামর্শ দেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷