ক্ষমতায় এসে কৃষির উন্নতির জন্যে সদাসচেষ্ট ছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর হাত ধরেই বাংলার কৃষিব্যবস্থায় প্রভূত উন্নয়ন হয়েছে। সামনেই গ্রীষ্মের দাবদাহ আসতে চলেছে, এবং বৃষ্টির পালাও। তাই দক্ষিণবঙ্গের দুই বন্যাপ্রবণ জেলায় বন্যা প্রতিরোধে ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
দক্ষিণবঙ্গের দুই জেলা বন্যাপ্রবণ। খানাকুল, আরামবাগ, উদয়নারায়ণপুর ডুবে থাকে প্রায় সারা বছরই, তাই বন্যার হাত থেকে বাঁচতেই এই আর্থিক বরাদ্দ। শুক্রবার তারকেশ্বরে এসে এ কথা ঘোষণা করেছেন মমতা। গতকাল বালিগড়িতে এক সরকারি অনুষ্ঠানে মমতা বলেন, হুগলির আরামবাগ, খানাকুল এবং হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর, আমতা প্রত্যেক বছর বন্যায় ডুবে যায়। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। দুর্ভোগে পড়েন অসংখ্য মানুষ। রাজ্য সরকার তাই বন্যা নিয়ন্ত্রণে পাকাপাকি ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। কেন্দ্রীয় সরকার কিছু করছে না। তাই রাজ্যই উদ্যোগ নেবে। ৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। আগামী ৩ বছরের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। তখন আর হাওড়া, হুগলি প্লাবিত হওয়ার ভয় থাকবে না। একই সঙ্গে আরামবাগ মহকুমার বন্যা নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আলুচাষের সঙ্গে যুক্ত কৃষকদেরও সুখবর শুনিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়েছেন, ১০ লক্ষ মেট্রিক টন আলু কিনবে রাজ্য সরকার। আলুচাষীদের স্বার্থে সরকারের এই সিদ্ধান্ত। এ জন্য এই খাতে ৫৫০ কোটি টাকা খরচ হবে রাজ্য সরকারের। হুগলি জেলা বরাবরই আলু চাষের ক্ষেত্রে অগ্রণী। এ বার আলুর ফলনও হয়েছে প্রচুর। আর বেশি ফলন মানেই চিন্তাও বেশি। চাষিরা দাম পাবেন তো! সব আলু বিক্রি হবে তো! মরশুমের ওই ফলন দিয়েই কত কত চাষির সারাবছর সংসার চলে। তাই এবারেও সমাধান সূত্র নিয়ে এলেন মমতাই।
মমতা বলেন, ‘হুগলি জেলায় সবচেয়ে বেশি আলু উৎপাদন হয়। এবারও আলুর ফলন খুবই ভাল হয়েছে। তাই স্বাভাবিক কারণেই আলুর দাম একটু কম থাকবে।’ সরকার সবসময় চাষীদের পাশেই থাকবে। শুধু আলু কিনলেই হবে না, সেই সমস্ত আলু মিড–ডে মিল সহ অন্যান্য কাজে লাগানো হবে। তাই ট্রান্সপোর্টেশনের খরচ বাবদ অতিরিক্ত আরও ১০০ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। সব মিলিয়ে মোট ৬৫০ কোটি টাকা খরচ হবে। এ ছাড়া এদিনের সভা থেকে কৃষকদের প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, সবাই আলু চাষ না করে অন্য কিছুও চাষ করুন। তা হলে আর এই সমস্যায় পড়তে হবে না আলুচাষীদের।