পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই পুরুলিয়ার ঝাড়খণ্ড সীমান্ত দিয়ে বারবার বাংলাতে বাইরের লোক ঢুকিয়ে অশান্তি সৃষ্টির অভিযোগ উঠছিল বিরোধীদের দিকে। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে যাতে রাজ্যের শান্তি বিঘ্নিত না হয়, আগের বারের মত অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে তাই মমতার নির্দেশে পুরুলিয়ার ঝাড়খণ্ড সীমানা এলাকাগুলিতে নজরদারি চালানোর জন্য পুলিশকে সিসি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ার বসানোর কাজ শুরু হল।
পুরুলিয়া জেলা সফরে এসে প্রশাসনিক রিভিউ মিটিংয়ে এই ওয়াচ টাওয়ারের ঘোষণা করে গিয়েছিলেন মমতা। সেই নির্দেশ মতো পুরুলিয়া জেলা পুলিশ অত্যাধুনিক ওয়্যারলেস প্রযুক্তিযুক্ত প্রায় ৩ হাজার ১৫০টি সিসি টিভি ক্যামেরা বসাতে চলেছে পুলিশ। একই সঙ্গে প্রায় ৩৮০ কিমি ঝাড়খণ্ড সীমান্তবর্তী এলাকায় ৫৮টি অত্যাধুনিক ওয়াচ টাওয়ার বসানোর কাজ শুরু করেছে।
ভোটের সময় বহিরাগত প্রবেশের বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ হলেও কোনও সিসি ক্যামেরা না থাকায় সেই সময় কাউকে ধরা যায়নি। পুরো বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়। তার পরেই মমতা জেলায় প্রশাসনিক বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কর্তাদের কাছে জানতে চান। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সিসি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ার হবে জেলার ঝাড়খণ্ড সীমান্তের ১৩টি থানা এলাকায়। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, এই রাজ্যে মাওবাদীদের কোনও রকম কার্যকলাপ না থাকলেও পাশের রাজ্য ঝাড়খণ্ডে তাদের নিয়মিত আসা–যাওয়া রয়েছে। সেই বিষয়টি ভেবেই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে।
যে ওয়াচ টাওয়ারগুলি করা হচ্ছে সেগুলিতে অত্যাধুনিক ক্যামেরা, ওয়্যারলেস–সহ নানা আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে। ঝাড়খণ্ড সীমান্ত এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসলে যেমন মাওবাদীদের গতিবিধি বোঝা যাবে তেমনই সীমানা এলাকায় যে কোনওরকম সন্দেহজনক গতিবিধি পুলিশের নজরে আসবে। পুরুলিয়া জেলা পুলিশ অত্যাধুনিক ওয়্যারলেস প্রযুক্তিযুক্ত প্রায় ৩ হাজার ১৫০টি সিসি টিভি ক্যামেরা বসাতে চলেছে পুলিশ। একই সঙ্গে প্রায় ৩৮০ কিমি ঝাড়খণ্ড সীমান্তবর্তী এলাকায় ৫৮টি অত্যাধুনিক ওয়াচ টাওয়ার বসানোর কাজ শুরু করেছে।
জেলা পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া বলেন, ‘সিসি ক্যামেরা এবং ওয়াচ টাওয়ার বসানোর কাজ শুরু হচ্ছে। পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১৩টি থানা এলাকায় ঝাড়খণ্ড সীমানা রয়েছে ৩৮০ কিলোমিটার। ওই বিশাল এলাকায় নজরদারি চালাতে বসানো হচ্ছে ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ার। গোটা প্রকল্পে খরচ পড়বে ১৩ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা। তবে ওই ১৩টি থানা এলাকায় এই নজরদারির পাশাপাশি নজরদারি টিম ও অ্যাকশন স্কোয়ার্ড মজুত থাকবে বলেও জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। ঝাড়খণ্ড থেকে আসা যাওয়া প্রতিটি গাড়ি–সহ এরাজ্য থেকে যাওয়া গাড়ি ও মানুষের গতিবিধিও বোঝা যাবে।