ছবি কখনো নির্বাক হয়না। মুহুর্তকে আটকে রাখা হয়তো সহজ, কিন্তু তার পিছনে থেকে যায় অনেক গল্প। গোটা পৃথিবীর হয়ে শান্তি ঘোষণা করা একটা ছবি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী দুনিয়া ভুলতে পারেনি আর। রবিবার শেষ হয়ে গেল সেই গল্পকথা।
১৯৪৫ সালের ১৪ অগস্ট। আমেরিকার কাছে আত্মসমর্পণ করল জাপান। শেষ হল সর্বক্ষয়ী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। যুদ্ধশেষের খবর ছড়াতেই মানুষের ঢল নেমেছিল রাস্তায়। হাজার হাজার নিউ ইয়র্কবাসীর মধ্যে সে দিন মিশেছিলেন জর্জ-গ্রেটাও। জয়ের আনন্দে ভাসা শহরে হঠাৎই কাছাকাছি এসে পড়েন নাবিক জর্জ ও পেশায় নার্স গ্রেটা। দু’জনেই তখন একুশ। শান্তির আনন্দে আত্মহারা জর্জ অপরিচিতা গ্রেটার কোমর জড়িয়ে গভীর আশ্লেষে চুম্বন এঁকে দিয়েছিলেন তাঁর ঠোঁটে।
বছর তিনেক আগে মারা যান গ্রেটা। এবার চলে গেলেন জর্জও। রবিবার ৯৫ বছর বয়েসে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন জর্জ।
দীর্ঘদিন পর্যন্ত পৃথিবী জানতই না, ছবির নায়ক-নায়িকার পরিচয়। ছবিটি বিখ্যাত হওয়ার পরে অন্তত ১১ জন দাবি করেন, তাঁরাই ওই ছবির নাবিক। অন্তত তিন জন মহিলা দাবি করেছিলেন তাঁরাই ছবির চুম্বনরত ওই মহিলা। ২০১২ সালে লরেন্স ভেরিয়া-র লেখা ‘দ্য কিসিং সেলর: দ্য মিস্ট্রি বিহাইন্ড দ্য ফটো দ্যাট এন্ডেড ওয়ার্ল্ড ওয়ার টু’ বইয়ে মেলে জর্জ ও গ্রেটার যাবতীয় তথ্য। লেখক জানান, প্রযুক্তির সাহায্যেই ওই নায়ক-নায়িকার পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছিলেন তিনি।
সে দিন টাইমস স্কোয়ারে হাজির ছিলেন জর্জের প্রেমিকা রিটা পেট্রিও। পেশায় তিনিও নার্স। পরে রিটাকেই বিয়ে করেন জর্জ। সময় বয়ে গেলেও রয়ে যাবে নিউইয়র্কের টাইমস স্কোয়ারে রয়ে যাবে তাঁদের মূর্তি ‘আনকন্ডিশনাল সারেন্ডার’।