মৃত্যুর আগেই মৃত্যুর স্থান তৈরি। বর্তমান সময় দাঁড়িয়ে ক্রমশই সন্তানের সঙ্গে বাবা-মায়েদের দূরত্ব বাড়ছে। তাই তাঁদের ভরসায় না থেকে মৃত্যুর আগেই নিজের কবরস্থানের আগাম বুকিং সারলেন ২০০ জন। সদ্য সমাপ্ত ঢাকার আবাসন মেলায় এমনই অভিনব উদ্যোগের সাক্ষী থাকলেন অনেকে৷ অর্থের বিনিময়ে আগে থেকেই নিজে নিজে কবরস্থল কিনে রাখলেন তাঁরা৷
সদ্য সমাপ্ত আবাসন মেলায় স্টল দিয়েছিল এমআইএস হোল্ডিংস নামের একটি প্রমোটারি সংস্থা। তাঁরাই মেলায় আগতদের আগাম কবরস্থল বুকিংয়ের সুযোগ করে দেয়৷ সংস্থার আধিকারিক আফরোজা সুলতানা বলেন, ‘‘প্রথমে অনেকেই আমাদের এই উদ্যোগকে বাঁকা চোখে দেখেন৷ কিন্তু পরে এটাকে গ্রহণ করেছেন বহু মানুষ৷ কারণ তাঁরা সচেতন হয়েছেন৷’’ সংস্থাটির তরফে জানানো হয়েছে, সরকারের সাহায্যে এই কবরের প্লট গড়ে তোলা হয়েছে৷ জমির আকার ভেদে দাম ধার্য করা হয়েছে৷ তিন লক্ষ টাকা থেকে ২৫ লক্ষ টাকা ধার্য করা হয়েছে প্লটের দাম৷
বর্তমানে ঢাকা শহরে ছ’টি কবরস্থান রয়েছে। সবচেয়ে বড় কবরস্থানটি রয়েছে আজিমপুরে৷ যেখানে ষাট হাজার মানুষকে কবর দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে৷ সেখানেই সমাধিস্থ করা হয়েছে ভাষা আন্দোলনের সৈনিক সালাম, বরকত, রফিক-সহ অন্যান্যদের৷ গুলশানের কবর স্থানটি আকারের দিক থেকে দ্বিতীয়৷ সেখানে ২০ হাজার জনকে কবর দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানেই সমাধিস্থ করা হয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মা, কাকা, তিন ভাই ও দুই বউদিকে৷
এই মুহূর্তে বাংলাদেশে কবরস্থানের বেশ অভাব। এই অভিনব উদ্যোগে অংশগ্রহণকারী এক ব্যক্তি জানালেন, “ঢাকা শহরে কবরের স্থানের যে আকাল, সে কথা মাথায় রেখে এই উদ্যোগ সত্যি ব্যতিক্রম”। কিন্তু সকলেই এই ভাবনাকে সমর্থন করতে পারেননি। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন যে সময়ে দাঁড়িয়ে যে কোন সামাজিক সম্পর্কের অবনতি ঘটছে, সেরকম এক সময়ে এই রকম উদ্যোগ কি সম্পর্কের মৃত্যুকে আরও ত্বরান্বিত করে তুলবে না?