বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলেছেন, যে দল যেখানে বেশি শক্তিশালী সেই দলই সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক। তাহলেই বিজেপিকে হারানো অনেক সহজ হয়ে যাবে। অর্থাৎ একের বিরুদ্ধে এক ফর্মুলা। তাই মমতার দেখানো সেই পথে হেঁটেই গোরক্ষপুর-ফুলপুর উপনির্বাচনের মতো আবারও হাত ধরেছে দুই রাজনৈতিক ‘চিরশত্রু’। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের জন্য জোট করেছে উত্তরপ্রদেশের দুই শক্তিশালী দল সপা-বসপা।
এর আগে গোরক্ষপুর-ফুলপুর উপনির্বাচনে জোট করে এসেছিল সাফল্য। বসপা-সপার মিলিত শক্তি দুই কেন্দ্রেই হারিয়ে দিয়েছিল বিজেপিকে। ফলে, লোকসভা ভোটেও বুয়া-বাবুয়ার জোট বাঁধার ঘোষণায় কি চাপে বিজেপি? অন্তত সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো অখিলেশ সিংহ যাদবের দাবি তেমনটাই। শুধু তাই নয়, বিজেপি নেতারা নাকি রাজনৈতিক কেরিয়ার বাঁচাতে জোটে শামিল হতে চাইছেন, টুইটে এমনই দাবি করলেন অখিলেশ।
শনিবার সপার-বসপার জোট ঘোষণার পাশাপাশি ৩৮-৩৮ ফর্মুলায় আসন সমঝোতার ঘোষণাও করেন মায়া-অখিলেশ। আবার রবিবার কংগ্রেসও উত্তরপ্রদেশে ‘একলা চলো’ নীতি ঘোষণা করেছে। এর মধ্যেই অখিলেশ দাবি করে বসলেন জোটের ঘোষণা হতেই, বিজেপি নেতারা শঙ্কিত, আতঙ্কিত। নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, ‘শুধু রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতা-নেত্রীরাই নন, নিচু স্তরের কর্মীরাও জোটে শামিল হতে চাইছেন।’ তাঁর কথায় “বিজেপির বুথ স্তরের কর্মীরা এখন বলছেন, ‘হামারা বুথ, হুয়া চাকনাচুর’। নিচু স্তরের এই কর্মীরা এতটাই হতাশ যে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সপা-বসপায় ভিঁড়তে চাইছেন।”
প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশে মোট লোকসভার আসন ৮০টি। গতবারের লোকসভা ভোটে মোদী ম্যাজিকে উত্তরপ্রদেশে কার্যত হাওয়া হয়ে যায় সপা এবং বসপা। আলাদা লড়ে অখিলেশের দল পেয়েছিল মাত্র ৫ আসন। সপার ঝুলি ছিল শূন্য। অন্য দিকে বিজেপি এবং তাদের সহযোগী ‘আপনা দল’ মিলে ৭৩টি আসনে জয়লাভ করে। তার পর বিধানসভা নির্বাচনেও ক্ষমতা দখল করে বিজেপি।
কিন্তু গত বছর ফুলপুর এবং গোরক্ষপুর লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রায় ২৫ বছর পর জোট করে লড়াই করে উত্তরপ্রদেশের যুযুধান দুই দল সপা এবং বসপা। এবং যার ফলে ভরাডুবি হয় পদ্মের। বিজেপিকে অমন গোহারা হারানোর পরই পাকাপাকি ভাবে জোট বাঁধার সিদ্ধান্ত নেন উজ্জীবিত বুয়া-বাবুয়া। যে কারণে এখন সিঁদূরে মেঘ দেখছে গেরুয়া শিবির।