ওপার বাংলাকে বিদ্যুৎ জোগাতে এবার স্বেচ্ছায় এগিয়ে এল এপার বাংলা। জানা গেছে, বাংলাদেশের হাসিনা সরকারের বিদ্যুৎ জোগানের মাত্রা বাড়াতে পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলা। সদ্যই সে দেশের নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে টানা তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন হাসিনা। তাই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাসিনাকে আরও এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উপহার দিতে চান। এ বিষয়ে কেন্দ্রের কাছে আবেদনও করেছে রাজ্য।
যেহেতু রাজ্যে প্রয়োজনের তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন অনেকটা বেশি। তাই কমন গ্রিডের মাধ্যমে অন্য রাজ্যগুলিকে বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ বাড়ানাে হচ্ছে। এখন বাংলাদেশ ভারত থেকে প্রতিদিন ১১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছে। রাজ্যের তরফে আলাদাভাবে ২০০ মেগাওয়াট করে দেওয়া হয়ে থাকে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে দুই বছর আগে থাকতেই বাংলাদেশকে এই বিদ্যুৎ দিচ্ছে রাজ্য। এবার শেখ মুজিবের দেশকে আরও ভাল রাখতে উদ্বৃত্ত আরও হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিতে চায় বাংলা।
বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমাদের দুই বাংলার সংস্কৃতি একই। মুখ্যমন্ত্রী চান আমাদের সম্পর্ক যেন আরও দৃঢ় হয়। কেন্দ্র অনুমতি দিলে আমরা হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিতে পারি।’ সংশ্লিষ্ট দফতর সূত্রে খবর, বাংলার প্রতিদিন ৬৬০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। সৌর ও জলবিদ্যুৎ ধরলে সেই সংখ্যা দশ হাজার মেগাওয়াটের মতো। প্রয়োজনের তুলনায় তা বেশি। এমনিতে সর্বোচ্চ চাহিদা ধরলে তা ৮ হাজার মেগাওয়াট ছাড়ায় না।
প্রতিবেশী দেশের মানুষ কোন রকম সমস্যা না থাকে, সে ব্যাপারেই সাহায্য করতে চান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। জানা গেছে, বহরমপুর থেকে বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার আন্তঃবিদ্যুৎ সংযোগ গ্রিডের মাধ্যমে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহের কার্যক্রমের কাজ শেষ হলে আরও বেশি করে বিদ্যুৎ পাবে প্রতিবেশী দেশ। এভাবে বিদ্যুৎ প্রদানের মাধ্যমেই আরও শক্ত হতে পারে পারস্পরিক সম্পর্কের বুনিয়াদ, এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
গত সেপ্টেম্বরেই দুই দেশ ও রাজ্যের প্রকল্পের সূচনা অনুষ্ঠানে ভিফিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা হয় ওপার বাংলার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও এপার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। দুই নেত্রীর সম্পর্ক বরাবরই ভালো। হাসিনাকে ভোটের জন্য আগাম শুভেচ্ছাও জানিয়েছিলেন মমতা। ভোটে জয়ের পরেও হাসিনার সঙ্গে কথা হয় তাঁর। বাংলাদেশ সরকার জ্বালানি খাতে বিদ্যুতের প্রয়োজনের কথা জানানোর পরই রাজ্যের তরফে বাংলাদেশকে সদিচ্ছার কথা জানানো হয়। তবে এক্ষেত্রে অনুমতি প্রয়োজন কেন্দ্রের।