বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনী বলছে, সিদ্ধিদাতা গণেশ খুবই ভোজনরসিক। তবে তাঁর বাহন যে এমন ‘মাতাল’ তা কে জানত! উত্তরপ্রদেশ পুলিশ জানিয়েছে, গণেশের চেয়ে মোটেও কম যায় না তাঁর বাহন ইঁদুর। তারা নাকি চাইলেই সাবাড় করে দিতে পারে ১০০০ লিটার মদ!
গত কয়েক মাসে রাজ্যের বিভিন্ন বেআইনি মদের দোকান থেকে প্রায় এক হাজার লিটার বেআইনি মদের বোতল বাজেয়াপ্ত করেছিল উত্তরপ্রদেশের বরেলি ক্যান্টনমেন্ট থানার পুলিশ। খবর, সেই থানারই মালখানা থেকে সবকটি বোতলের মদ সাফ করে দিয়েছে ইঁদুর বাহিনী! এমনই হাস্যকর দাবি থানার কর্তাদের।
প্রায় ১০০০ লিটার মদ বিভিন্ন প্লাস্টিকের পাত্র করে থানারই এক স্টোররুমে রাখা ছিল। নিয়মমাফিক বাজেয়াপ্ত জিনিস কয়েক দিন পর নষ্ট করে দিতে হলেও আশ্চর্যজনক ভাবে এ ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। এরপর ওই মালখানায় একটি কুকুর ঢুকে মারা গেলে দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে। সেই কুকুরটির মৃতদেহ বের করতে গিয়ে ওই মালখানার দরজা খুলতেই হতভম্ব হয়ে যান উপস্থিত পুলিশকর্তারা।
চোখ ছানাবড়া করে তাঁরা দেখেন যে, বাজেয়াপ্ত করা গ্যালন গ্যালন মদের বোতল মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। এবং সবকটিই ফাঁকা! ছিটেফোঁটাও অবশিষ্ট নেই বোতলে। এর সঙ্গেই তাঁরা নাকি দেখেন, কিছু ফাঁকা মদের বোতলের পাশে অনেক ইঁদুর ঘুরে বেড়াচ্ছে। ব্যাস, আর যায় কোথায়? এতদিন অভিযোগ ছিল ‘নেংটি ইঁদুরে ঢোল কাটে’। আর এবার মদ চুরিরও সমস্ত দোষ পড়ল ইঁদুরদের ঘাড়ে।
কিন্তু এখন প্রশ্ন, নিয়ম অনুযায়ী ওই সমস্ত বাজেয়াপ্ত করা মদের বোতল নষ্ট করে ফেলা হল না কেন? এর উত্তরে থানার তরফে জানানো হয়েছে, উপরমহল থেকে নির্দেশ না আসাতেই নাকি সেই কাজ করা সম্ভব হয়নি। তাই নষ্ট করার বদলে এতদিন তা থানার স্টোররুমেই যত্ন সহকারে রাখা ছিল। কিন্তু উপরমহল থেকে কেন নির্দেশ এল না, এর প্রশ্নের আর উত্তর পাওয়া যায়নি। গ্যালন গ্যালন মদের বোতলের ছিপি সহজে খুলে গেলেও, এক্ষেত্রে মুখ খোলেননি কেউই।
তবে পুলিশ অবশ্য এই মদ-চোরদের খুঁজে পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী। বরেলির পুলিশ সুপার অভিনন্দন সিংহ এই ঘটনা ঘটার পিছনে ঠিক কী কারণ আছে তা খতিয়ে দেখতে পূর্নাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। বাজেয়াপ্ত মদ সাবাড় করে দেওয়ার ঘটনায় ইঁদুর বাহিনীই দায়ী থাকলে সেই ইঁদুরের ‘গ্যাং’টিকে যত দ্রুত সম্ভব পাকড়াও করা হবে বলেও জানান তিনি! এবং এই তদন্তের কাজে তিনি যে উপরমহলের চেয়ে, উপরওয়ালার উপরই বেশি ভরসা রাখছেন, তাও নিজের হাবেভাবে বুঝিয়ে দেন বরেলির পুলিশ সুপার।