ট্র্যাক্টর, সার, কীটনাশক, লাগবে না কিছুই। এবার থেকে চাষের জমিতে মন্ত্র জপ করলেই নাকি হবে দারুন ফলন! কৃষকদের চিন্তা দূর করতে এমনই এক ‘উপায়’ বাতলালেন গোয়া সরকার।
সে রাজ্যের কৃষি দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এবার থেকে গোয়ায় কৃষকদের দৈব পদ্ধতিতে চাষ শেখানো হবে। তাঁদের টানা ২০ দিন, ২০ মিনিট করে চাষের জমিতে বৈদিক মন্ত্র জপে সন্তুষ্ট করতে হবে দেবদেবীদের। তাতে ফসলের উৎকর্ষ এবং উৎপাদন সবকিছুই বাড়বে। ফলে কৃষকদের বৈদিক মন্ত্র পড়ার নির্দেশ দিচ্ছে গোয়ার বিজেপি সরকার। এই ধরনের কৃষি পদ্ধতিতে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে ‘কসমিক ফার্মিং’ বা দৈবচাষ।
এই বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে ইতিমধ্যেই গোয়া সরকার ‘শিব যোগ ফাউন্ডেশন’ বা ‘ব্রহ্মকুমারী’র মত কিছু সংস্থার সঙ্গেও কথাবার্তা চালাচ্ছে সরকার। দৈবচাষের মাধ্যমে কিভাবে কৃষকরা লাভবান হবেন, সে বিষয়ে ইতিমধ্যেই কৃষি মন্ত্রী বিজয় সরদেশাই এবং কৃষি বিভাগের ডিরেক্টর নেলসন ফিগুয়েরদো হরিয়ানায় গুরু শিবানন্দের সঙ্গে কথা বলে এসেছেন।
সংবাদমাধ্যমে ফিগুয়েরদো বলেন, ‘দৈব পদ্ধতির গুরুত্ব বোঝানো হচ্ছে কৃষকদের। দৈব পদ্ধতিতে মন্ত্র জপে গোটা ব্রহ্মাণ্ডের শক্তি জমিতে টেনে আনা যায়। তাতে ফসলের উৎকর্ষ এবং উৎপাদন দুই-ই বাড়ে। আবার রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে দূষণের চিন্তাও দূর হয়। খরচও বাঁচে। কৃষিক্ষেত্রে জৈব বিপ্লব ঘটাতে চলেছে ভারত। তাতে গোটা দুনিয়া তোলপাড় হয়ে যাবে।’
এর আগে কৃষিমন্ত্রী উপদেশ দিয়েছিলেন, নিজেদের মধ্যে ‘মহাজাগতিক শক্তি’ অর্জন করার। তার জন্য ধ্যান করতেও বলেছিলেন তিনি। তার সঙ্গে প্রত্যেকদিন অন্তত ২০ মিনিট করে ‘ওম রম জাম সা’ জপ করলে কৃষকদের সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে বলেই জানিয়েছিলেন কৃষিমন্ত্রী বিজয় সরদেশাই। আর এবার মন্ত্র জপে ফলন বাড়ানোর নিদান দিল সরকার।
গোয়া সরকরের এমন নিদানে ইতিমধ্যেই সমালোচনা শুরু হয়েছে নানা স্তরে। বিরোধীদের কটাক্ষ, মাঠের ফলনে মন্ত্রই যখন মুশকিল আসান, তখন ভোটের ময়দানেও মন্ত্র জপেই তো ফসল ঘরে তুলতে পারে বিজেপি। তবে রাজনীতির কারবারিদের মতে, এখনই বিভিন্ন সমীক্ষা যা ইঙ্গিত দিচ্ছে, তাতে মন্ত্র জপেও আর পদ্ম ফুটবে না দেশে।