একদিকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। অন্যদিকে শিবসেনা। ‘রামলালা হাম আয়ে হে, মন্দির ওহি বানায়েঙ্গে’ অযোধ্যার অলিতে-গলিতে আবারও সেই ৯২-এর কোলাহল। মন্দিরের দাবিতে দুটি ঘোরতর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের এই অযোধ্যা অভিযান ঘিরে থরথর উত্তেজনায় কাঁপছে উত্তরপ্রদেশ। গোটা এলাকায় আগেভাগেই জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা।
‘রাম এখনও বনবাসে। আর সরকার গেছে কুম্ভকর্ণের নিদ্রায়’। এরই ‘প্রতিবাদে’ অয্যোধ্যায় পা রেখেছেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে ও আদিত্য ঠাকরে। অন্যদিকে ‘পহলে মন্দির, ফির সরকার’ দাবিতে আজ রবিবার অযোধ্যায় হাজার হাজার সাধুসন্তদের নিয়ে ‘ধর্ম সংসদ’-এর আয়োজন করেছে ভিএইচপি। তারা জানিয়েছে, রবিবার অযোধ্যায় তাদের ওই ‘ধর্মসভা’ হল ‘যুদ্ধের আগে শেষ দামামা।’ এর পরে সরাসরি মন্দির নির্মাণই লক্ষ্য। একইসঙ্গে নাগপুর এবং বেঙ্গালুরুতেও সভা করছে তারা। দুদলের এমন সাম্প্রদায়িক সমাবেশ নিয়ে চিন্তায় প্রশাসন। তাই ‘রাম’ই এখন চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কপালে। অযোধ্যা জুড়ে তাই নামানো হয়েছে র্যাফ। স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে করে দেওয়া হয়েছে ব্যারিকেড।
আসলে ‘রাম’ নিয়ে বিজেপিকে টক্কর দিতে চাইছে শিবসেনা। তাই তারা হাত মিলিয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সঙ্গে। তাই এমন বড় মাপের আয়োজন, মুহুর্মুহু শঙ্খধ্বনি। আজ রবিবার সন্ধ্যায় রামজন্মভূমিতে প্রার্থনা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘ঘোর শত্রু’ বলে পরিচিত শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। তার পর সরযূ নদীর তীরে গিয়ে করবেন আরতি। কথা বলবেন স্থানীয় বাসিন্দা ও এলাকার সাধুসন্তদের সঙ্গে। পুণের শিবনেরি দুর্গ থেকে একটি পাত্রে মাটি নিয়ে অযোধ্যায় আসছেন উদ্ধব। রামের মূর্তি নির্মাণের জন্য সেই মাটি তিনি তুলে দেবেন সাধুসন্ত, মহন্তদের হাতে।
শিবসেনা ও ভিএইচপির দু’টি কর্মসূচি নিয়ে এখন চরম উত্তেজনা অযোধ্যায়। ২৬ বছর আগে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনাবলীর সেই দুর্বিষহ স্মৃতি তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। ‘রামভক্ত’দের ভয়ে তাই এখন কার্যত, ‘রামনাম’ জপছে অযোধ্যা!