লোকসভা ভোটের আগে লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি অস্বস্তি বাড়াচ্ছে মোদী সরকারের।
আলু, পিঁয়াজ, সবজি, ফলের দাম বাড়ছে হু হু করে। পাইকারি মূল্য সূচক বিগত চার বছরের মধ্যে সবথেকে শীর্ষ বিন্দু স্পর্শ করেছে। কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের প্রকাশ করা সাম্প্রতিক রিপোর্টে এই তথ্য জানা গিয়েছে।
জুন মাসের পণ্যের মূল্য সূচক এক ধাক্কায় এতটাই বেড়েছে যে বোঝা যাচ্ছে প্রতিটি ক্ষেত্রেই মুদ্রাস্ফীতির হার বাড়ছে বিপজ্জনকভাবে। পাইকারি মূল্যসূচক জুন মাসে ৫.৭৭ শতাংশে পৌঁছেছে। যা মাত্র মে মাসে ছিল ৪.৪৩ শতাংশ।
নিত্যপণ্য আর খাদ্যপণ্যের এভাবে দাম বাড়ায় নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত, দরিদ্র জনতার হেঁশেলে আগুন লেগেছে। ডিজেল ও পেট্রলের বিপুল মূল্যবৃদ্ধির জন্য গত তিন মাসে পণ্যের সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। ফলে আশঙ্কা ছিল মূল্যবৃদ্ধির। শেষ পর্যন্ত সেই আশঙ্কাই সত্যি হল।
আসন্ন তিন রাজ্যের বিধানসভা ভোট এবং তারপর লোকসভা ভোটের আগে এভাবে সব রেকর্ড ছাপিয়ে মূল্যবৃদ্ধি বিপুলহারে বাড়তে থাকায় রীতিমতো উদ্বেগে পড়েছে বিজেপি। ঠিক যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ আনুষ্ঠানিকভাবে না হলেও রণকৌশল সাজিয়ে নির্বাচনী প্রচার শুরু করে দিয়েছেন, তখনই এভাবে পাইকারি মূল্য সূচকের হার প্রায় আকাশ ছুঁতে চলায় যথেষ্ট চাপে পড়েছে বিজেপি।
বুধবার থেকে সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হবে। ওই অধিবেশনের পরই মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড়ের বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি পুরোদমে শুরু হবে। সেই কারণেই সংসদের অধিবেশনের আগেই ধান সহ বিভিন্ন ফসলের সহায়ক মূল্য বিপুল বৃদ্ধি করে মোদি সরকার বিরোধীদের মুখ বন্ধের চেষ্টায় ব্যস্ত। ‘কৃষক ও কৃষির উন্নয়ন’ ইস্যুতে যখন শাসক বিরোধী শিবিরের মধ্যে চাপানউতোর এবং পারস্পরিক দোষারোপের রাজনীতি পুরোদস্তুর শুরু হতে চলেছে, তখনই আচমকা মূল্যবৃদ্ধি বিপুল উদ্বেগ বাড়াচ্ছে সরকারের
২০১৪ সালে যখন ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারে বিজেপি লোকসভা ভোটের লড়াইয়ে নেমেছিল তখন দুর্নীতির পাশাপাশি ছিল মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে জেহাদ। ক্ষমতায় এসে মূল্যবৃদ্ধি এবং দুর্নীতিমুক্ত সরকার উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল নরেন্দ্র মোদির। সেই আশ্বাস পূরণ হয়নি। উল্টে বাড়ছে জিনিষপত্রের দাম। ফলে বেশ চাপে মোদী সরকার।