ঘরে ঘরে চাকরি, সরকারি কর্মীদের জন্য নতুন বেতন কমিশনের মাধ্যমে বাড়তি মাইনে এবং আরও একগুচ্ছ সুযোগ-সুবিধা।বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির ফাঁপা প্রতিশ্রুতির নজির আবারও প্রকাশ্যে। ত্রিপুরায় ক্ষমতায় আসার কয়েক মাসের মধ্যে বিপ্লব দেব সরকারের প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিল, সরকারি কর্মী বা শিক্ষক হিসেবে যাঁরা নতুন চাকরিতে ঢুকবেন, তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট পেনশন বলে আর কিছু থাকবে না। থাকবে না প্রভিডেন্ট ফান্ডও।
এই সিদ্ধান্তে বিজেপির বিরুদ্ধে ‘প্রতারণার’ অভিযোগ এনে সরব ত্রিপুরার সিপিএম, তৃণমূল।
নতুন সরকারি কর্মীদের জন্য আর স্থায়ী পেনশনের ব্যবস্থা থাকবে না। ত্রিপুরার অর্থ দফতরের তরফে গত সপ্তাহেই এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। তাতে উল্লেখ, যাঁরা ১ জুলাই, ২০১৮ থেকে কাজে যোগ দেবেন, তাঁদের অবসরকালীন পাওনা বিবেচিত হবে ‘কন্ট্রিবিউটরি পেনশন স্কিম’ মেনে। কেন্দ্রের ওই প্রকল্পের আদলে ত্রিপুরা সরকারও নিজস্ব নিয়ম-বিধি চালু করছে।
ত্রিপুরা সরকারের যুক্তি, পেনশন খাতে ২০০৬-০৭ সালে রাজ্যের খরচ হত ২৬৭ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা। ২০১৭-১৮ সালে সেই বোঝা বেড়ে হয়েছে ১৬০৫ কোটি এক লক্ষ। ভবিষ্যতের নাগরিকদের উপরে বোঝা কমানোর লক্ষ্যেই পেনশন ব্যবস্থায় এই সংস্কারের সিদ্ধন্ত বিপ্লব দেব সরকারের।
কেন্দ্রে অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানায় ২০০৩ সালে চালু হয়েছিল ‘‘কন্ট্রিবিউটরি পেনশন স্কিম’। যা কার্যকর হয় ১ জানুয়ারি, ২০০৪ থেকে। ত্রিপুরা সরকারের বক্তব্য, আসাম , হিমাচল, কর্নাটক, অন্ধ্র-সহ অনেক রাজ্য কেন্দ্রের ওই ম়ডেল মেনে নিয়েছে। ত্রিপুরাও এ বার সেই পথে যাবে। এর ফলে সরকারি কর্মচারীদের বেতনের একাংশ জমা নেওয়া হবে পেনশন স্কিমের জন্য। সেই তহবিল বিনিয়োগ করা হবে শেয়ার বাজারে। কর্মীদের অবসরের সময়ে শেয়ারে যা দাম থাকবে, তার উপরেই নির্ভর করবে তাঁদের অবসরকালীন প্রাপ্তি। এই সিদ্ধান্তে আতঙ্কে ত্রিপুরার নবীন সরকারি কর্মীরা।
তবে অনেক বছর ধরে যাঁরা চাকরি করছেন, তাঁদের কর্মদক্ষতা যাচাইয়ের জন্য যেমন প্রশাসনিক পর্যালোচনা হয়, তেমন নিয়ম-ই চালু থাকবে। বিরোধীদের অবশ্য আশঙ্কা, প্রশাসনিক পর্যালোচনার নামে অনেকের উপরে খাঁড়া নামবে।