লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরই আরও আগ্রাসী হয়ে উঠেছে গেরুয়া শিবির। গোটা রাজ্যজুড়ে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছে তারা। তবে এর পাশাপাশিই দলের অন্দরে চলছে গোষ্ঠীকোন্দল। এবার যেমন এলাকা ও ক্ষমতার দখল নিয়ে বিজেপির চরম গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে পূর্ব বর্ধমানের রাজনৈতিক মহলে। দলের জেলা অফিসে খোদ জেলা সভাপতির সামনেই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক সঙ্ঘর্ষের শুরু হয়ে যায়। সঙ্ঘর্ষ চলাকালে পরপর ৬ রাউন্ড গুলি চলারও অভিযোগ উঠেছে। এমনকী, বোমাবাজিও চলে। শুধু তাই নয়। দু’পক্ষের লড়াইয়ের জেরে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে খোদ বিজেপির জেলা কার্যালয় এবং দলের জেলা যুব সভাপতি শ্যামল রায়ের বাড়িতেও। এই ঘটনায় তাঁর শিশুকন্যাও জখম হয়েছে। জানা গেছে, দু’পক্ষের মারধরে প্রায় ১০-১২ জনের মতো বিজেপি কর্মী জখম হয়েছেন।
এই ঘটনার পর পুলিশের কাছে দুই গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘বিজেপির দুই পক্ষের তরফ থেকে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।’ বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। বিজেপির জেলা যুব সভাপতি শ্যামল রায়ের অভিযোগ, ‘বিজেপিতে ৭২ ঘণ্টা আগে যারা যোগ দিয়েছে, তারাই দলের জেলা কার্যালয়ে আক্রমণ করেছে। এমনকী, জেলা কার্যালয়ে ৪ রাউন্ড গুলি চালিয়েছে। দলের দু’জন কার্যকর্তার ওপরও হামলা চালিয়েছে।’ খোকন সেনের নেতৃত্বে এই ঘটনা ঘটেছে বলে তাঁর অভিযোগ। দলের কার্যালয়ের পাশাপাশি তাঁর বাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে যুব সভাপতির দাবি। জেলার পদাধিকারীর ওপরও যদি এই ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকে, তা হলে আগামীদিনে আরও ভয়ঙ্কর কিছু ঘটতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
তাঁর আরও অভিযোগ, সিপিএমে থাকার জন্য গত ৯ বছর তাঁরা ক্ষমতা থেকে দূরে রয়েছেন। সেই ক্ষমতাকে পুনরুদ্ধার করতে বিজেপির জার্সি পড়েছেন মাত্র। শ্যামল এ কথাও জানান যে তিনি উচ্চ নেতৃত্বকে বলবেন, ‘হয় দল তাঁদের তাড়াবে, না হলে দল আমাদের ছেড়ে দেবে। আমরা দল ছাড়ব, নয় তাদের দল ছাড়তে হবে।’ তিনি বলেন, ‘যে ভাবে আমার বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়েছে, তা সিপিএম এবং তৃণমূলও কোনওদিন করেনি।’ তবে চুপ নেই অন্য পক্ষও। খোকন সেন বলেন, ‘গতকাল সন্ধেয় জেলা পার্টি অফিসে বসার সময় চাঁদ নামে এক যুবককে মারধর করেন শ্যামল। তিনি যাকে পাচ্ছেন তাকেই ধরে নাকি পেটান। এই কথা শোনার পর আমি প্রতিরোধ করি। তখন আমাদের ভয় দেখাতে ২ রাউন্ড গুলি ছুড়েছেন শ্যামল। এমনকী, তিনকোনিয়ায় এসে বোমাবাজি করেছেন। আমি বিষয়টি জেলা সভাপতিকে জানাই। আমি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই শ্যামল পরিকল্পিতভাবে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন।’