কোনও মূল্যেই রাজ্যের উন্নয়নের ধারাকে ব্যাহত হতে দিতে নারাজ তিনি, এ কথা বারবারই হাবেভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবারের প্রশাসনিক বৈঠকেও পূর্ত, বিদ্যুৎ, খাদ্য, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি। বৈঠকের মধ্যেই দফতর ধরে ধরে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। এর জেরে প্রতিটি দফতরেই তড়িঘড়ি পর্যালোচনা বৈঠক শুরু হয়েছে।
যেমন আগামী ১৮ জুন পর্যালোচনা বৈঠক ডেকেছে পূর্ত দফতর। বৈঠক করবেন খোদ পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। সেই বৈঠকে দফতরের সব চিফ ইঞ্জিনিয়ার, সচিবদেরও ডাকা হয়েছে। নবান্ন সভাঘরে সেই বৈঠক হবে। নেওয়া হবে সব কাজের খতিয়ান। কোন কাজে ঢিলেমি হচ্ছে, তাও খতিয়ে দেখা হবে। কোথায় কোথায় রাস্তা খারাপ আছে, তার তালিকাও করতে বলা হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।
আবার পূর্ত দফতরের মতোই মুখ্যমন্ত্রীর রোষের মুখে পড়ে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। ওই দফতরের কাজ উল্লেখ করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাঁকুড়ায় পানীয় জলের জন্য পাইপলাইন ফেলা হয়েছে। কিন্তু মাটির তলায় আর সেই পাইপ বসেনি। এ ব্যাপারে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। দিন কয়েক আগে এই দফতরের দায়িত্ব নিয়েছেন ডঃ সৌমেন মহাপাত্র। তিনি মঙ্গলবারই দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে পাইপ কেন ফেলে রাখা হয়েছে, তা জানতে চান।
মন্ত্রীর তরফে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে আলোচনা করতে আগামীকাল, বৃহস্পতিবার সব প্রকল্পের ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে বৈঠকে ডাকা হয়েছে। এ ব্যাপারে সৌমেনাবাবু বলেন, ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, কেন পাইপ পড়ে আছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। কোথায় কোথায় কোন প্রকল্পের কাজের কী অগ্রগতি হয়েছে, তারও বিস্তারিত রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। দ্রুতগতিতে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, বিদ্যুৎ দফতরের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ তুলেছিলেন, ভোটের সময় সিলেক্টিভ লোডশেডিং করা হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ‘পাওয়ার কাট’ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা সৃষ্টি করতে কয়লা সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এইসব বিষয় নিয়ে মুখ্যসচিব মলয় দে বিদ্যুৎ সচিব সুনীল গুপ্তার সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে বিদ্যুৎ দফতরের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। মোদ্দাকথা, মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনার পর এখন সব দফতরই তৎপর হয়ে পড়েছে।