বার্নপুরের বাটা মোড়। উড়িয়াদের বড় অংশের বাস এই এলাকায়। রয়েছে জগন্নাথ দেবের মন্দিরও। কান পাতলেই রাস্তার চায়ের দোকানে আকছার শোনা যাচ্ছে উড়িয়া গান – ‘তাতে দেখিলা দিনারু মোরো কাউটি লাগুনি মনো…।’ এটা বাবুল সুপ্রিয়র গাওয়া। আমাদের সাংসদ। বললেন সেই উড়িয়া দোকানি। তবে ‘গায়ক’ বাবুলের উড়িয়া গানে যখন মেতে বাটা মোড়, তখন তাঁর বিরুদ্ধেই ক্ষোভ জমেছে আসানসোলের ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এস বি গড়াই রোডের কাছে তালপোখারিয়া। এঁদো সরু গলি। অনেকেই বলেন ‘মিনি পাকিস্তান’। গরমের দুপুরে জনমানব নেই। কুকুর ঘুরে বেড়াচ্ছে ক’টা। ভাঙাচোরা গলিতে নোংরা আর খোলা ড্রেনের দুর্গন্ধে চলা দায়। এটাই আসানসোলের আসল চিত্র।
‘সাংসদ কেমন কাজ করলেন?’ এখানকার সাজদা, গিলানিদের জবাব, ‘কিচ্ছু করেননি।’ কোনও রাখঢাক না রেখেই তালপোখরিয়াতে সাজদা, গিলানি, মোহাম্মদ আফজল, মুন্নি বেগম, নুর খাতুনরা সকলেই ভোটের নামে, বাবুলের নামে রে রে করে উঠলেন। অপ্রশস্ত গলির বাসিন্দাদের অভিযোগ, জল, আলো, রাস্তা- এর কোনওটার ব্যবস্থা করা হয়নি বার বার বলা সত্ত্বেও। তাঁদের দিকে ফিরে চাননি কেউ। তাই এই সাংসদকে তাঁরা ফের চান না। তবে প্রায় গোটা তালপোখরিয়া বাবুলের নিন্দে করলেও, সাংসদ সেই দায় চাপালেন বিরোধীদের ঘাড়ে। বাবুলের সাফাই, ‘তৃণমূল মুসলিমদের এ সব বোঝাচ্ছে। তাই ওঁরা ভুল বুঝেছেন। আমি ওঁদের পাশে আছি।’ সত্যিই কি পাশে আছেন বাবুল? বাসিন্দাদের ক্ষোভই বলে দিচ্ছে, উত্তরটা ভোটবাক্সেই পাবেন বিদায়ী সাংসদ।