বুধবার বিকেলে এগরা-২ ব্লকের বাসুদেবপুর এলাকায় নির্বাচনী সভা করলেন মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী তথা রাজ্যসভার সংসদ সদস্য মানস ভুঁইয়া। সভামঞ্চ থেকে ধর্ম নিয়ে ভেদাভেদের রাজনীতিকে কটাক্ষ করলেন মানস।
মানস বলেন বিজেপির হাত ধরে বামেরা রাম হয়েছে। এই প্রসঙ্গে বিরোধীদের কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “সারা পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থী রাজনীতি কর্পূরের মতো উবে গিয়েছে। এখন বিজেপির হাত ধরে বামপন্থীরা ‘রামপন্থী’ হয়ে গিয়েছে। তারা বিজেপির হাত ধরে ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেদের অস্তিত্ব বিপন্ন করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জব্দ করতে চাইছে। বাংলাকে ধ্বংস করতে চাইছে। সিপিএমের এহেন দেউলিয়াপনার নমুনা আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে আগে কখনও দেখিনি”।
তিনি আরও জানান, “ভাবতে অবাক লাগে, সিপিএমের মতো দল যারা কি না টানা ৩৪বছর ধরে রাজ্য শাসন করেছে, তারাই এখন বিজেপির পতাকা বাহক ও সরবরাহকারী হয়ে গিয়েছে। সিপিএম এখন বিজেপির গোডাউনে পরিণত হয়েছে। সিপিএমের লোকজন বিজেপির হয়ে গাছে গাছে পতাকা বাঁধছে। সিপিএম পদ্মফুল চাষে মদত দিয়ে চলেছে। এখন বামেরা হয়েছে রাম আর রামেরা হয়েছে বাম। আসলে এদের টার্গেট হল, যেনতেনপ্রকারেণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জব্দ করা। কিন্তু যদি আপনারা চান গণতন্ত্র রক্ষা হোক, বাঁচার অধিকার সুরক্ষিত হোক, দেশে একটি উন্নয়নমুখী, গতিশীল সরকার তৈরি হোক, তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন করুন। মানস ভুঁইয়া কোনও ফ্যাক্টর নয়। আপনারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেই ভোট দিন”।
একই সঙ্গে মোদীর ব্যর্থতা নিয়েও কথা বলেন তিনি। মানস বলেন, “মোদী অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। কিন্তু গত পাঁচ বছরে কী হয়েছে? বছরে দু’কোটি বেকারের চাকরি হয়েছে কি? বরং ৫০হাজার কৃষক আত্মহত্যা করেছে। বিদেশ থেকে কালো টাকা উদ্ধারের প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি। বিজেপির লক্ষ্য হচ্ছে, বাংলা দখল কর, ঘৃণার রাজনীতি আমদানি কর, সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প আমদানি কর। আসলে এরা বাংলাটাকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে খাক করে দিতে চাইছে। আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসবের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বলে তাঁকে দমন করার চেষ্টা অবিরত করেছে চলেছে বিজেপি। অথচ মুখ্যমন্ত্রী বাংলার মানুষের জন্য ৫২টি জনমুখী সরকারি কর্মসূচি উপহার দিয়েছেন। এখন তাঁর নেতৃত্বে প্রকল্পগুলি ব্যাপকভাবে রূপায়িত হচ্ছে। জনমুখী প্রকল্পের এহেন নিদর্শন আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো জনদরদী মুখ্যমন্ত্রী সারা বিশ্বে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না”।
গতকাল মানস বাসুদেবপুর ছাড়াও পানিপারুল, আটবাটি, বালিঘাই ও এগরা শহরে পরপর পাঁচটি ম্যারাথন সভা করেন। সভাগুলিতে এলাকার বিধায়ক সমরেশ দাস-সহ অন্যান্য নেতৃত্ব ও জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। প্রতিটি জনসভায় উপচে পড়া ভিড় ছিল। এদিন প্রতিটি সভাতেই মানসবাবু বিজেপি ও সিপিএমকে এক হাত নেন।