মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথেই হাটুক কেন্দ্রের সরকার। মমতার ধর্ম নিরপেক্ষতাই পাথেয় হোক কেন্দ্রীয় সরকারের। নববর্ষের শুভ ক্ষণেই একথা জানালেন আসানসোলের সেই পুত্র হারা ইমাম,তাঁর নাম মহম্মদ ইমদাদউল্লাহ রশিদি।
রশিদই আসানসোলেই নূরানি মসজিদের ইমাম। পয়লা বৈশাখের মসজিদে বসে রসিদিই বললেন, ‘দেশজুড়ে ঘৃণার বাতাবরণ দেশকে পিছিয়ে দিচ্ছে৷ ধর্মে-ধর্মে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্যের অভাব প্রকট হচ্ছে৷ প্রেমের আবহ ছড়িয়ে পড়ুক দেশে, শান্তিতে থাকুন দেশবাসী৷’ নাম না করলেও তিনি যে মোদী সরকারের সমালোচনা করলেন সেটা স্পষ্ট। পরোক্ষেভাবে মমতার ধর্ম নিরপেক্ষতাকে প্রশংসা করলেন সেটাও স্পষ্ট।
তাঁকে ‘ভোট দেবেন কিনা’ প্রশ্ন করা হলে তাঁর জবাব, প্রতিটি নাগরিকের অধিকার ভোট দেওয়া৷ সেই নাগরিক অধিকার পালন করা উচিৎ৷ আর তাই তিনি ভোট দেবেন বলেও জানান। তাঁর মতে এমন কেউ সরকার গড়ুক যাঁরা দেশে সহিষ্ণুতার বার্তা দেবেন৷ প্রেম, সম্প্রীতি ছড়িয়ে দেবেন দেশজুড়ে। তারপরই তিনি যোগ করেন, ‘আমরা বেশ শান্তিতেই আছি৷’ এতেই মনে করা হচ্ছে মমতার সম্প্রীতির বার্তায় তিনি খুশি।
অনেক দুঃখ বুকে চেপেও তিনি শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন সবার মধ্যে। তাঁর নাবালক পুত্রকে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়তে দেখেছেন তিনি। কিন্তু পুত্রশোক তাঁকে ইসলামের স্বরূপ থেকে বিচ্যুত করেনি৷ আজ যখন নির্বাচনী অশান্তির আশঙ্কা আরও একবার দেখা দিয়েছে বাংলায়, তখনও সেই অহিংসাকেই পাথেয় করছেন আপন আদর্শে নিষ্ঠ মানুষটি৷
প্রসঙ্গত, বছর খানেক আগে রামনবমীর মিছিল ঘিরে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে প্রাণ গিয়েছিল ইমামের নাবালক ছেলে মহম্মদ শিবঘাতুল্লার। এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে প্রতিশোধ স্পৃহা জেগে ওঠে। তবে রুখে দাঁড়ায় খোদ ইমদাদউল্লাহ রশিদি। তিনি কড়া ভাষায় তাঁদের রুখে দেন। বলেন, ‘কোনও প্রতিশোধের পথে হাঁটবে না কেউ৷ এই মুহূর্তে এলাকায় শান্তি বজায় রাখা জরুরি৷’