আজ থেকে দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন। কিন্তু এই মুহূর্তে আসামে বেজায় বিপাকে গেরুয়া শিবির। ভোটের মুখে বিজেপি যত এড়িয়ে যেতে চাক, বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলই(ক্যাবই) এবারের লোকসভা ভোটে আসামে সবচেয়ে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে শরণার্থী হিসেবে আসা হিন্দু, খ্রিষ্টান, শেখ, বৌদ্ধ, পার্সি ও জৈনদের নাগরিকত্ব দিতে লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ করায় মোদী সরকার। কিন্তু আসাম থেকে শুরু করে গােটা উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ঝড় বয়ে যায় বিলটি বিরুদ্ধে। রাজ্যসভায় বিলটি আটকে যায়। বিপদ বুঝে এখন আসামে নিজেদের উগ্র হিন্দুত্বের লাইনকে আড়াল করতেই ব্যস্ত বিজেপি। তাই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে যারপরনাই রক্ষণাত্মক দলের রাজ্য নেতৃত্ব। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ঘটা করে ক্যাব চালুর কথা সঙ্কল্প পত্রে উল্লেখ করলেও, বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব বলছেন, তাঁরা আলোচনার মাধ্যমেই নাগরিকত্ব সংশোধনীর পক্ষে।
অন্যদিকে, ক্যাব-জটিলতায় পড়ে বিজেপির শরিক অগপ ইস্তাহারই প্রকাশ করতে পারেনি এখনও। মঙ্গলবার প্রথম দফার ভোট প্রচারের শেষ দিনে দলের অন্যতম কান্ডারি হিমন্ত বিশ্বশর্মার রোড শো-র সময় প্রদর্শিত হল, ‘মিছা কথা ন কবো’ লেখা গেঞ্জি। উজান আসামের এক সভায় সংখ্যালঘুদের মন পেতে হিমন্ত ‘আল্লা’র নামে শপথ নিয়ে ভোট চান। কিন্তু রোড শো চলাকালীন সুমেশ ডেকা নামে এক যুবক ‘মিছা কথা ন কবো’ লেখা গেঞ্জি নিয়ে হিমন্তকে কটাক্ষ করে যান।
শুধু তাই নয়, এরই মধ্যে বিজেপির চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছে বিশ্বনাথ চারিয়ালির একটি ঘটনা। হোটেলে গোমাংস বিক্রির দায়ে বৃদ্ধ দোকানদারকে জোর করে শুয়োরের মাংস খাওয়ানোর অভিযোগকে ঘিরে সমালোচনার ঝড় বইছে আসামে। সোমবার ৬৮ বছরের বৃদ্ধ শওকত আলির হোটেলে ঢুকে তাঁকে মারধর করে কয়েকজন যুবক। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শওকত জানিয়েছেন, তাঁকে শুয়োরের মাংস খেতে বাধ্য করা হয়েছে। জানা গেছে, ওই যুবকরা এলাকায় বিজেপি সমর্থক বলেই পরিচিত।
ভোটের মুখে এ ধরনের ঘটনার নিন্দা করেছে সাড়া অসম সংখ্যালঘু ছাত্র সংস্থা বা আমসু। আমসুর সভাপতি রিজাউল করিম সরকার মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালকে চিঠি দিয়ে ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে। আসাম প্রদেশ কংগ্রেসের সহ সভাপতি ভগীরথ করণও নিন্দা করেছেন এই ঘটনার। ক্যাবের পাশাপাশি এই ইস্যু নিয়েও আসামে এখন ‘শনির দশা’ চলছে বিজেপির।