এখন আইপিএলের লিগ টেবিলের শীর্ষে রয়েছে কলকাতা। তাই কেবল কলকাতারই জয়জয়কার। কিন্তু সেই কলকাতার মধ্যে কোথাও দেখা নেই বাংলার। আইপিএল মানেই সাধারণ ক্রিকেটার থেকে তারকা হয়ে ওঠা। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে মোট আটটি দল। প্রত্যেক দলে পঁচিশ জন করে আছে ধরলেও সব মিলিয়ে ক্রিকেটারের সংখ্যা অন্তত দু’শো। কিন্তু তার মধ্যে বাংলার ক্রিকেটারের সংখ্যা মাত্র চার জন। তাঁদের মধ্যে তিনজন আবার প্রথম একাদশে নিয়মিত সুযোগই পাচ্ছেন না।
সানরাইজার্স হায়দরাবাদে রয়েছেন ঋদ্ধিমান সাহা ও শ্রীবৎস গোস্বামী। দুজনের কেউ চলতি মরসুমে একটি ম্যাচেও খেলেননি। শুধুমাত্র কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে নিয়মিত খেলছেন মহম্মদ শামি। তা-ও বাংলার ক্রিকেটার হিসেবে তাঁকে ধরা হলেও শামি আসলে উত্তরপ্রদেশের। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরে আছেন প্রয়াস রায়বর্মণ। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে চার ওভারে ৫৬ রান দেওয়ার পরে আবার কবে প্রয়াস মাঠে নামার আর সুযোগ পাবেন সেই বিষয়েও কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই বঙ্গ ক্রিকেটমহলে ক্রমশ জোরাল হচ্ছে এই প্রশ্ন যে, এ রাজ্যে কি আইপিএল খেলার মতো কোনও প্রতিভাই নেই? আসলে বাংলা থেকে ব্যাট হাতে ঝড় তোলার মতো কেউ বেরোননি। কেকেআরে খেলা নীতিশ রানা বা রাজস্থান রয়্যালসের সঞ্জু স্যামসনের মতো কেউ আসেননি, যাঁকে দেখে উৎসাহিত হতে পারেন আইপিএলের কোনও দলের স্পটারেরা। এমনকি কেকেআরেও নেই বাংলার কোনও ক্রিকেটার।
বাংলার প্রাক্তন অধিনায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্ল এই ঘটনায় খুবই হতাশ। টানা সাত বছর কেকেআরের হয়ে আইপিএল খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। নাইট রাইডার্সের জার্সিতে দু’বার চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য লক্ষ্মী বলছেন, ‘‘ভাল খেলতে না পারলে কোনও ভাবেই আইপিএলে সুযোগ পাওয়া যায় না। মনোজ আর ডিন্ডা কেন সুযোগ পায়নি জানি না, কিন্তু অভিমন্যু ঈশ্বরনকে বাদ দিলে বাকিরা আইপিএল দলগুলির নজর কাড়ার মতো খেলেওনি।’’
বাংলার বর্তমান কোচ অরুণ লাল সাফ বলে দিচ্ছেন, “আইপিএল খেলার মতো ফিটনেসই এখনও আনতে পারেননি এখানকার অনেক ক্রিকেটার। তিনি নিশ্চিত, আগামী মরশুমে বাংলা থেকে ক্রিকেটারেরা আইপিএলে খেলার সুযোগ পাবেন। যখনই আইপিএল দেখি, তখন এই কথাটাই মাথায় আসে, অনামী সব ছেলেরা এই লিগে খেলে কোটিপতি হচ্ছে। বাংলার ছেলেরা কেন নেই। তবে বাংলায় এমন অনেকেই আছে যারা আইপিএল খেলার যোগ্য। একটু বেশি পরিশ্রম করলেই হবে। আগামী মরশুমে আমরা পরিবর্তন দেখতে পাব বলে আমি আশাবাদী”।