দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে সেনার যে কোনও পদক্ষেপকে সমর্থন করলেও, সঙ্কীর্ণ রাজনীতি আর নির্বাচনে জেতার জন্য সেনাবাহিনীকে ব্যবহারের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই যুদ্ধের আবহাওয়ায় গোটা দেশ যখন সরগরম তখন সরাসরি শান্তির বার্তা দিয়ে মমতা বললেন, ‘রাজনীতির প্রয়োজনে আর একটা নির্বাচন জেতার জন্য যুদ্ধ আমরা চাই না। আমরা শান্তি চাই’।
পুলওয়ামা কাণ্ডের পর পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতীয় বিমানবাহিনীর অতর্কিতে হানা এবং তারপর থেকেই যেভাবে গোটা দেশে কার্যত যুদ্ধ-পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে ক্ষুব্ধ মমতা বলেন, ‘প্রথমদিন থেকেই শুনছি, শত্রুপক্ষের ৩০০-৩৫০ লোক মারা গিয়েছেন। কত কী, আদৌ কেউ মারা গিয়েছেন কি না, আমরা জানতে চাই। আরও জানতে চাই, বোমা কোথায় ফেলা হয়েছিল, আদৌ বোমা ঠিক জায়গায় পৌঁছেছিল কি না’। এই প্রসঙ্গে বিভিন্ন বিদেশি সংবাদপত্রের নাম উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তারা বলছে, এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি। বোমাটা অন্য জায়গায় পড়েছে, মিস হয়েছে। মানুষ মারা যায়নি। কেউ বলছে একজন মারা গিয়েছেন। তো সত্যটি কী, এটা তো মানুষ জানতে চাইতেই পারে। আমরা বাহিনীর সঙ্গে রয়েছি। কিন্তু বাহিনীকে সত্যি কথাটা বলার সুযোগ দেওয়া উচিত। দেশের লোকেরও সত্যিটা জানা উচিত’।
বুধবারই দিল্লীতে বিরোধী দলগুলির বৈঠক সেরে এসেছেন মমতা। সেখানেও জাতীয় রাজনীতি নিয়ে ‘সঙ্কীর্ণ রাজনীতি’ করার জন্য আঙুল তোলা হয়েছে দেশের শাসক দল বিজেপির দিকে। এ দিনও তাঁর অভিযোগ, পুলওয়ামার ঘটনা এবং তার পরে ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রত্যাঘাত, কোনও কিছু নিয়েই প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলগুলির সঙ্গে আজ পর্যন্ত একটি বৈঠকও করেননি। মমতা বলেন, ‘সবার আগে দেশ। আমরা সবাই দেশের পক্ষে। তবে জওয়ানদের রক্তের বিনিময়ে রাজনীতি পছন্দ নয়। বীর জওয়ানদের রক্তের দাম অনেক। আমরা তাঁদের জন্য গর্বিত’। এরপরেই মমতা কটাক্ষ করে বলেন, ‘কেউ কেউ জওয়ানদের নিয়ে ভোটবাক্সের রাজনীতি করছেন, এটা নিন্দনীয়’। তাঁর বক্তব্য, ‘যুদ্ধ যুদ্ধ বলে যে বাতাবরণ তৈরি করা হচ্ছে, তা একশ্রেণীর সংবাদমাধ্যমের পরিকল্পিত। এটা আসলে ‘মিডিয়া ওয়ার’।