নিজের পাড়াতে সরস্বতী পুজোর উদ্বোধন করতে গিয়ে আততায়ীর গুলিতে মারা যান কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস৷ ঘটনার পর পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন নিহত বিধায়কের পরিবারের পাশে থাকবেন৷ তাঁর প্রতিশ্রুতি মতই গতকাল নিহত বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের শিশুপুত্রের পড়াশোনার দায়িত্ব নিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এছাড়া সত্যজিতের স্ত্রী ও দুই ভাইকে চাকরি দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন তিনি।
রবিবার কৃষ্ণনগর রবীন্দ্রভবনে নিহত তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের স্মরণসভা ছিল। সভায় বক্তব্য পেশ করেন তৃণমূলের মহাসচিব। সেখানেই এই ঘোষণা করেন তিনি৷ পার্থ জানিয়েছেন সত্যজিতের পরিবারের যাবতীয় দায়িত্ব তৃণমূলের৷
পার্থ জানান, “সত্যজিতের পুত্রের পড়াশোনার সব দায়িত্ব আমি শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে নয়, তৃণমূলের একজন সৈনিক হিসাবে নিলাম। সত্যজিৎ আমার শিক্ষা দফতরের অধীনেই কাজ করত। তাঁর স্ত্রী আবেদন করলেই চাকরি পাবেন। আর সত্যজিতের দুই ভাই আছেন। তাঁদেরও যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি দেওয়া হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলের কথা ভাবেন। দলের কেউ বিপদে পড়লে তাঁর কথা ভাবেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে”৷
সভায় পার্থ বলেন, ‘যারা রাজনৈতিকভাবে মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূলকে মোকাবিলা করতে পারেন না, যারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তাকে ভয় পায়, তারাই সত্যজিৎকে সরিয়ে দিল। সত্যজিৎ শুধু বিধায়ক বা তৃণমূল যুব সভাপতি ছিলেন না, তিনি মতুয়াদের মধ্যেও জনপ্রিয় ছিলেন। মতুয়াদের এক বিরাট অংশকে সত্যজিৎ আগলে রেখেছিলেন। তাই মতুয়াদের নিয়ে যখন বিভাজনের রাজনীতি করছে কিছু শক্তি, তখন আমরা সত্যজিৎ-কে সামনে রেখে পালটা সভা করেছিলাম মতুয়াদের নিয়ে। সেখানে মমতাবালা ঠাকুর উপস্থিত ছিলেন। সত্যজিৎ সেই সভা ডেকেছিলেন। আমরা গিয়েছিলাম। হত্যা করে তৃণমূলকে কেউ শেষ করতে পারেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও বারবার পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু মানুষের আশীর্বাদে তিনি ফিরে এসেছেন। আমাদের আক্ষেপ যে, আমরা সত্যকে বাঁচানোর চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারিনি।’
কৃষ্ণনগর রবীন্দ্রভবনে অনুষ্ঠিত এই স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি, জেলা পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডল, মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, রত্না ঘোষ ও চন্দ্রনাথ সিংহ, সভাধিপতি রিক্তা কুণ্ডু, জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত প্রমুখ। এদিন সভা শুরুর আগে কাশ্মীরে নিহত জওয়ানদের স্মৃতিতে শহিদ বেদিতে মাল্যদান করা হয়। পরে মঞ্চে রাখা সত্যজিতের ছবিতে মাল্যদান করা হয়। তারপর স্মরণসভা শুরু হয়।