পুলওয়ামায় জঙ্গী হানার ঘটনায় শোকে বিহ্বল গোটা দেশ। সন্ত্রাসবাদী আক্রমণের বিরুদ্ধে ফুঁসছে দেশবাসী। এবার দেশবাসীর এই আবেগকেই প্রচারের হাতিয়ার করতে পুরোদস্তুর ময়দানে নেমে পরেছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। বস্তুত ৪২ জওয়ানের মৃত্যুর ঘটনা দিয়েই লোকসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করেছেন গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতারা। নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী এবং দলের সভাপতি।
কাশ্মীরের ঘটনার পরেও নির্বাচনী প্রচারের কর্মসূচী বাতিল করেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিভিন্ন রাজ্যে জনসভা করে বেড়াচ্ছেন তিনি। ভাষণ শুরুই করছেন ‘বদলা’র আওয়াজ তুলে। মোদীর ভাষায়, ‘যে আগুন জনগণের মনে জ্বলছে তা আমার হৃদয়েও জ্বলছে’। বদলা নেওয়া হবে। এরপরেই ঘুরে-ফিরে নিজের সাফল্যের বিবরণে চলে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
কাশ্মীরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি যতই বিপজ্জনক হোক, কেন্দ্রের কোনও মন্ত্রীই উপত্যকায় থাকছেন না। খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও দিল্লী ছেড়ে বিভিন্ন রাজ্যে দলের সভায় প্রচারে ব্যস্ত। এমনকী এতবড় ব্যর্থতার পরেও রাজনাথ বলে দেন, মোদী সরকার কাশ্মীরের সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় সফল। তবে জওয়ানদের মৃত্যুর ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে স্বীকার করে নিয়ে বলেন, পাকিস্তানকে কড়া শিক্ষা দেওয়া হবে।
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ তাঁর প্রচারসভায় কাশ্মীরে জঙ্গীহানার ঘটনায় দেশবাসীর আবেগকেই হাতিয়ার করলেন। গোটা বক্তৃতায় পাকিস্তানকে তুলোধোনা করে হাততালি কুড়োলেন তিনি। এমনকী নিজের বক্তৃতায় সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের চেষ্টাও করেন তিনি। স্পষ্ট বলেন, ‘আসামকে দ্বিতীয় কাশ্মীর হতে দেব না’। সেই লক্ষ্যেই আসামে নাগরিকপঞ্জী তৈরি করা হচ্ছে। ওই পঞ্জী তৈরি হলে সমস্ত অনুপ্রবেশকারীদের তাড়িয়ে দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, এই বিলে ধর্মের ভিত্তিতে শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া রয়েছে।
এদিকে, দেশের প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যখন তাতাচ্ছেন, তখন সিআরপিএফ-এর পক্ষ থেকে সাবধান করে দিয়ে এক বার্তায় বলা হয়েছে, মৃত জওয়ানদের দেহখণ্ড বলে নকল ছবি ছড়িয়ে উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা চলছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ধরণের ছবি ছড়ানো অপরাধ। হিংসা বা উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা থেকে বিরত থাকুন। টুইটারে এই বার্তা দিয়েছে কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী।