সংসদীয় রাজনীতিতে ধর্নাকে জনপ্রিয় করার কৃতিত্ব যে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের, তা একবাক্যে স্বীকার করেন সকলেই। দলনেত্রীর পরামর্শেই গত ৫ বছরে সংসদ চত্বরে গান্ধীমূর্তির পাদদেশকে একপ্রকার ধর্নাস্থলই করে তুলেছে তৃণমূল। তাদের দেখে অন্যান্য রাজনৈতিক দলও ধর্নার জন্য বেছে নিয়েছে ওই জায়গাটি।
বুধবার বর্তমান মোদী সরকারের সংসদের শেষ অধিবেশনে সেই ধর্নাস্থলে হাজির হলেন স্বয়ং মমতা। বেলা ১২টা নাগাদ সংসদে ঢুকেই গাড়ি থেকে নেমে সোজা দলীয় সাংসদদের সঙ্গে নিয়ে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে হাজির হন তিনি। জাতির জনক গান্ধীজিকে প্রণাম করে সেখানে দাঁড়িয়েই ‘মোদী হঠাও’-এর শপথ নিলেন তৃণমূলনেত্রী। তাঁর সঙ্গে শপথ নিলেন দলীয় সাংসদরাও। দেশকে বাঁচাতে, সংবিধানকে বাঁচাতে, দেশ থেকে বিজেপি ও মোদীকে হঠাতে বলে হুঙ্কার দিলেন তিনি।
মমতা বলেন, ‘এটা সংসদের শেষ দিন। তাই আমরা জাতির জনকের কাছে প্রার্থনা করলাম দেশকে বাঁচাতে, বিজেপি ও মোদীকে হঠাতে।’ গতকাল ধর্নাস্থলে মমতার হাজির হওয়া এবং শপথ গ্রহণ তৃণমূলের গত ৫ বছরে একের পর এক ধর্না কর্মসূচী পালনের বৃত্তকে সম্পূর্ণ করল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
মমতা ধর্নামঞ্চে হাজির হওয়ার আগে অবশ্য সকাল সাড়ে দশটায় তৃণমূল সাংসদরা মোদী সরকারের ‘মেয়াদ শেষের দিন চলে এসেছে’ স্লোগান সামনে রেখে ধর্না দেন। “দু’হাজার উনিশ বিজেপি ফিনিশ’ লেখা পোস্টার, ‘মোদী সরকারের এক্সপায়ারি ডেট চলে এসেছে’ লেখা বিশাল ব্যানার হাতে নিয়ে তৃণমূল সাংসদদের ধর্না সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ধর্নামঞ্চে লোকসভার মুখ্যসচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ছোটা মোদী চোর হ্যায়, মেজলা মোদী চোর হ্যায়, সফেদ মোদী চোর হ্যায়, দাড়ি মোদী চোর হ্যায়’ স্লোগান ও তাতে দলীয় সাংসদদের গলা মেলানোয় সরগরম হয়ে ওঠে সংসদ চত্বর।
অন্যদিকে, গতকাল তৃণমূলের ধর্নায় যোগ দেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীও। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়েও থাকতে দেখা যায় তাঁকে। সবমিলিয়ে বলা যায়, সংসদে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধর্নার কর্মসূচী অতীতেও হয়েছে, কিন্তু সেটিকে এভাবে জনপ্রিয় করে তুলেছে তৃণমূলই।