বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কুৎসা ছড়ানোর অভিযোগে জাতীয় সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস নাও’-কে আদালতে নিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল। ইতিমধ্যেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে রাজ্যসভার দলনেতা ও জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন কলকাতার কড়েয়া থানায় ওই সংবাদ সংস্থার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছেন।
জানা গেছে, চলতি বছরের ২৫ অক্টোবর সংবাদমাধ্যম টাইমস নাও ‘নেশন ওয়ান্টস টু নো’ শিরোনামে একটি লাইভ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে। সেখানে অনুষ্ঠান পরিচালক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন স্বাতী জোশী। তুহিন সিনহা, নীরজা চৌধুরি এবং আশুতোষ মিশ্র ছিলেন আমন্ত্রিত অতিথি। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের ১৪২ তম জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে চলছিল আলোচনা। কিন্তু কথোপকথনের শুরু থেকেই তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে নানা অপমানজনক বক্তব্য, যা প্রকারন্তরে কুৎসারই নামান্তর।
বল্লভভাই প্যাটেলের জন্মদিন উপলক্ষ্যে প্রতি রাজ্যে ‘একতা দিবস’ চালুর ফরমান দিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। সেই উপলক্ষ্যে প্রতি স্কুলে বিশেষ অনুষ্ঠানেরও ফতোয়া দিয়েছে ইউজিসি। এমন তুঘলকি নির্দেশ মানতে রাজি হয়নি তৃণমূল। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, কেন্দ্রের ফরমান মানবে না রাজ্য। ‘টাইমস নাও’-এর অনুষ্ঠানে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আপত্তিজনক মন্তব্য করে বসেন পরিচালক স্বাতী। বলেন, ভারতকে একজোট করেছিলেন যে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল মমতা তাঁর বিরোধিতা করলেন, যার অর্থ তিনি প্রকারন্তরে পাকিস্তানকে সমর্থন করছেন। এখানেই না থেমে স্বাতী এবং তুহিন বলতে থাকেন, অনুপ্রবেশকারীরাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোট ব্যাঙ্ক। এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনীতির কারণে বাংলা মিনি পাকিস্তান হয়ে উঠবে বলেও অনুষ্ঠানে আশঙ্কা প্রকাশ করেন পরিচালক স্বাতী এবং অতিথি তুহিন।
এমন মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পরেই চাঞ্চল্য ছড়ায় বাংলার রাজনীতি মহলে। প্রবল অসন্তোষ ছড়ায় তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের মধ্যেও। সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘টাইমস নাও’-এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তাঁরা। আপত্তি জানান তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ও জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন। সঙ্গে কলকাতার কড়েয়া থানায় ‘টাইমস নাও’-এর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন তিনি। তৃণমূল কর্মীদের দাবি, ক্ষমা চাইতে হবে ওই সংবাদ সংস্থা টাইমস নাও-কে।