পুলওয়ামা বিস্ফোরণ নিয়ে এতদিন সমস্ত দেশ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নিন্দায় মুখর হলেও কোনরকম উচ্চবাচ্য করেনি ‘বন্ধু’ চীন। কিন্তু না চাইতেও এবার পুলওয়ামা হামলায় পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠীর নিন্দায় বাধ্য হল বেজিং। পুলওয়ামায় সিআরপিএফ জওয়ানদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনায় এবার ভারতের পাশে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। কড়া ভাষায় এই হামলার নিন্দা করে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে। বিবৃতিতে একমত হয়েছে চীন–সহ নিরাপত্তা পারিষদের ১৫টি স্থায়ী এবং অস্থায়ী সদস্য দেশ।
বিবৃতিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা একসঙ্গে জম্মু–কাশ্মীরের পুলওয়ামায় হওয়া আত্মঘাতী জঙ্গি বিস্ফোরণের নিন্দা করছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ওই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪০–এরও বেশি সিআরপিএফ জওয়ান। এছাড়া আহত হয়েছেন বহু। ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে জৈশ–ই–মহম্মদ জঙ্গীসংগঠন। শহিদ জওয়ানদের পরিবার, ভারতের জনগণ এবং ভারত সরকারের প্রতি রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ সমবেদনা জানাচ্ছে। পাশাপাশি আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি আমরা। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ কোনও ভাবেই সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে না। বিশ্ব শান্তির জন্য সন্ত্রাসবাদের যেকোনও রূপই ক্ষতিকারক। সন্ত্রাসবাদ দমনে নিরাপত্তা পরিষদ–সহ বিশ্বের সব দেশ যাতে ভারতের পাশে দাঁড়ায় সেজন্য আর্জি জানানো হচ্ছে। আর যে বা যারা সন্ত্রাসবাদকে মদত দিচ্ছে, তাদের যেন উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হয়’।
রাজনৈতিক মহলের মতে, কূটনৈতিক দিক থেকে ভারতের কাছে রাষ্ট্রপুঞ্জের এই বিবৃতি খুবই কার্যকর। এর ফলে আন্তর্জাতিক স্তরে আরও কোনঠাসা হয়ে পড়ল পাকিস্তান। এমনকি পাশে পেল না বন্ধু চীনকেও। যে চীন পুলওয়ামা হামলার পরেও পাকিস্তানের সমর্থনে কথা বলেছিল, তারাও এবার অন্যান্য দেশের চাপে পাকিস্তানের নিন্দায় সরব হল।
সূত্রের খবর, পুলওয়ামা হামলার পরই নিরাপত্তা পরিষদ এই বিবৃতি প্রকাশ করত। কিন্তু বিগত ৬ দিন ধরে চীন এই বিবৃতির বিরোধীতা করেছিল। বেজিংয়ের দাবি ছিল, বিবৃতিতে জৈশ–ই–মহম্মদ জঙ্গী গোষ্ঠীর নাম থাকবে না। এবং জম্মু–কাশ্মীরের ক্ষেত্রে ‘ভারত অধিকৃত জম্মু–কাশ্মীর’ লিখতে হবে। যদিও শেষপর্যন্ত চীনের এই দাবি আর মান্যতা পায়নি।