বছরের পর বছর কেটে গেলেও বাংলার প্রতি মোদী সরকারের দুয়োরানিসুলভ আচরণ রয়ে গিয়েছে সেই একইরকম। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির ভরাডুবির পর থেকে তা বেড়েছে আরও। বাংলাকে দীর্ঘদিন ধরেই বঞ্চনা করে আসছে কেন্দ্র। মনরেগা প্রকল্পের আওতায় ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বাংলার প্রাপ্য ন্যায্য টাকা আটকে রাখা হয়েছে। ব্যতিক্রম নয় মিড ডে-মিল বরাদ্দও। কেন্দ্রে শেষ মিড-ডে মিলে বরাদ্দ বাড়িয়েছিল ২০২২ সালে। এর দীর্ঘ ২ বছর পর প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক দুই খাতে মাথাপিছু নামমাত্র ৭০-৭৫ পয়সা করে বরাদ্দ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল মোদী সরকার! অর্থাৎ, এবার তাদের ঘৃণ্য রাজনীতির শিকার হচ্ছে গরিব পড়ুয়ারাও। এই নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। মিড-ডে মিলে এই যৎসামান্য বরাদ্দ বাড়ানোয় নিন্দার ঝড় উঠেছে শিক্ষকমহলেও। তাঁদের মতে, এই মিড-ডে মিলের খাতে আরও বেশি পরিমাণ টাকা বাড়ানো উচিত ছিল কেন্দ্রের। বর্তমান পরিস্থিতিতে যেভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েছে বিশেষ করে শাকসবজি এবং খাবারের দ্রব্যের, তাতে এই পরিমাণ বরাদ্দে জল গরমও সম্ভব নয়!
প্রসঙ্গত, গত দু’বছর ধরে বরাদ্দ না বাড়ায় স্বাভাবিকভাবেই ক্ষোভ বাড়ছিল। সেই পরিস্থিতিতে মিড-ডে মিলে প্রাথমিকে মাথাপিছু বরাদ্দ বেড়ে হল ৬.১৯ টাকা। আর উচ্চ প্রাথমিকে বেড়েছে ৯.২৯ টাকা। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “কেন্দ্রীয় শিক্ষা দফতর মিড ডে মিলের বরাদ্দ নাম কা ওয়াস্তে যৎসামান্য বাড়িয়েছে। প্রাথমিকে ছিল ৫ থেকে ৪৫ পয়সা সেটা এখন হয়েছে ৬ টাকা ১৯ পয়সা। উচ্চ প্রাথমিকে ছিল ৮ টাকা ১৭ পয়সা সেটা এখন হয়েছে ৯ টাকা ২৯ পয়সা। অর্থাৎ প্রাথমিকে বেড়েছে ৭৪ পয়সা উচ্চ প্রাথমিকে বেড়েছে ১ টাকা ১২ পয়সা। অথচ আমরা দাবি করেছিলাম প্রতি স্তরে ন্যূনতম অন্তত ৩ টাকা করে বাড়ানো হোক। আবার প্রমাণিত হল, শিশুদের মুখের খাবারের গুণাগুণ বা পরিমাণ বৃদ্ধিতে দেশের কেন্দ্রীয় সরকার কতটা উদাসীন আর নির্লিপ্ত।” সরব হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিজন সরকারও। “বিজেপির সরকার গরিব মানুষদের জন্য ভাবে না। বিদ্যালয়ে বাচ্চাদের খাবারের টাকা দিতেও বিজেপি সরকার চায় না। কিন্তু শিশুদের পাতে পুষ্টিসম্পন্ন খাবার পড়ুক তা বিজেপি সরকার চায় না। বিজেপি আসলে বড়লোকের সরকার, গরিবের জন্য এরা ভাবে না”, সাফ জানিয়েছেন তিনি।