বাংলার মুকুটে যোগ হল নতুন সাফল্যের পালক। রাজ্য সরকারের অক্লান্ত নজরদারিতেই শিশু-শ্রমিকমুক্ত হল বাংলা। গতকাল, অর্থাৎ শুক্রবার বিধানসভায় এই সুখবর জানান শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। তিনি বলেন, চলতি বছর সারা রাজ্যে একজনও শিশু-শ্রমিকের সন্ধান মেলেনি। এদিন বিধানসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে শিশু-শ্রমিকের সংখ্যা জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেন এক বিধায়ক। প্রশ্নের জবাবে শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক জানান, অভিযান চালিয়ে বিগত বছরগুলিতে শ্রম দফতরের আধিকারিকরা কিছু শিশু-শ্রমিককে উদ্ধার করলেও চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত কোনও শিশু-শ্রমিক উদ্ধার হয়নি। পরিসংখ্যান তুলে ধরে শ্রমমন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকারের আমলে রাজ্যে শিশু-শ্রমিকের সংখ্যা কমেছে ক্রমশই।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে অভিযান চালিয়ে ১৪ জন শিশু-শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়েছিল। ২০২১ সালে সংখ্যাটা নেমে আসে ৬ জনে। ২০২২ সালে ৩ জন, ২০২৩ সালে ১ জন শিশু-শ্রমিককে উদ্ধার করেন সংশ্লিষ্ট কমিটির আধিকারিকেরা। তবে চলতি বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের অক্টোবরের ৩১ তারিখ পর্যন্ত একজন শিশু-শ্রমিকেরও সন্ধান মেলেনি। এটা বড় সাফল্য। মন্ত্রী আরও জানান, প্রতিনিয়ত দফতরের আধিকারিকদের নজরদারি, সচেতনতা বাড়াতে প্রচার এবং শ্রমিক সংগঠন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, মালিকদের মিলিত প্রয়াসের ফলেই রাজ্যকে শিশুশ্রম-মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। রাজ্যে যাতে কোনওভাবেই শিশু-শ্রমিক না থাকে সে-বিষয়ে বিধায়কদের আরও সক্রিয় হওয়ারও আবেদন জানান শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। প্রতিবছর ১২ জুন রাজ্যে শিশু-শ্রমিক দিবস পালন করা হয়। এ-প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ১৪ বছরের নিচে সকলের যে কোনও ধরনের কাজ আইনবিরোধী, কেবলমাত্র পারিবারিক ব্যবসা ও অভিনয় থেকে আয়ের ক্ষেত্র ছাড়া। শ্রমমন্ত্রী অভিযোগ করেন, ২০২১ সাল থেকে কেন্দ্রীয় সরকার জাতীয় শিশু-শ্রমিক প্রকল্পে অর্থ সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় রাজ্যে ২৯০টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু ছিল। যেখানে ১২,১২১ জন শিশু-শ্রমিককে প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় সাহায্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই চরম সংকটের সম্মুখীন হয়েছে তারা।