গত ৫ আগস্ট সংসদে ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা খারিজের ঘোষণা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সংখ্যাগরিষ্ঠতার বলে বিল পাশ করিয়ে কাশ্মীর থেকে লাদাখকে বিচ্ছিন্ন করে দু’টি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করার ঘোষণা করেন তিনি। তারপর থেকে কেটে গিয়েছে ৫৪ দিন। কিন্তু উপত্যকা এখনও স্বাভাবিক হয়নি। দু’টি মাত্র জায়গায় মোবাইল পরিষেবা চালু হলেও ইন্টারনেট সম্পূর্ণ বন্ধ। অনিবার্য কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রায় ৪৬ হাজার যুবক-যুবতী। যার মধ্যে অধিকাংশ তথ্য-প্রযুক্তি এবং পর্যটন সেক্টরে কাজ করতেন। শুক্রবার এমনই পরিসংখ্যান দিয়েছেন কাশ্মীর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট শেখ আশিক আহমেদ।
প্রসঙ্গত, ৫২ দিন আগেও শ্রীনগরের সফটওয়্যার সংস্থা ‘লেলাফে’র অফিসে প্রায় ১০০ জন কর্মী থাকত। ফোন-ইন্টারনেট বন্ধ থাকার জেরে লাটে উঠেছে ব্যবসা। ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় বর্তমানে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন প্রায় তিন হাজার তথ্য-প্রযুক্তি কর্মী। শেখ আশিক আহমেদ জানিয়েছেন, উপত্যকার ১,১০০ হোটেলের ৮০ শতাংশ দু’মাস ধরে বন্ধ। ৩০০টি রেস্তরাঁ, ৯০০টি হাউসবোট এবং ৬০০টি শিকারায় কর্মী কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাঁচ হাজার ট্যুরিস্ট ট্যাক্সি চালকও ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ক্যুরিয়ার সেক্টরের তিন হাজার কর্মীর হাতেও কোনও কাজ নেই। বেতন পাচ্ছেন না হাজার হাজার বেসরকারি স্কুল শিক্ষকরা। চাকরি হারানোর আশঙ্কায় রয়েছেন তাঁরাও।
আমলদার সফটওয়্যার্সের ডিরেক্টর খুরশিদ আহমেদ জানিয়েছেন, অর্ধেক সংস্থা ইতিমধ্যেই কাশ্মীর ছেড়ে চলে গিয়েছে। এই দু’মাসে শুধু আমাদের ক্ষতি হয়েছে ১০ লক্ষ টাকা। ক্ষতির মুখে পড়েছে হোটেল ব্যবসাও। এই পরিস্থিতির মধ্যেই শুক্রবার কাশ্মীরের একাধিক জায়গায় নতুন করে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। সিল করে দেওয়া হয়েছে শ্রীনগরের বাণিজ্য কেন্দ্র লালচক। নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে শহরের হজরতবাল জোন এবং শহরতলির নৌহাট্টা, রায়নাওয়ারি, সফাকদল, খানয়ার ও মহারাজগঞ্জ থানা এলাকায়। গান্ধেরওয়াল, অনন্তনাগ, অবন্তীপোরা, সোপোর এবং হান্দওয়ারা শহরেও জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। আবার, গত এক মাসের মতো গতকালও কোনও বড় মসজিদে নামাজ পাঠ করতে দেওয়া হয়নি। রাস্তাঘাটে যানবাহন চলাচলও যথেষ্ট কম ছিল।