বিদেশ সফরের হিসাব দেবেন না। রাফাল চুক্তির দাম জানাবেন না। সাড়ে চার বছরে কত কালো টাকা এল তাও জানাবেন না মোদী সরকার। এসব কাদের বাঁচাতে? এমনই অভিযোগ তুললেন সঞ্জীব চতুর্বেদী নামের এক আমলা।
২০১৪ সালের জুন মাসে পর বিদেশ থেকে কত কালো টাকা দেশে ফেরানো হয়েছে, তথ্য জানার অধিকার আইনে তা জানতে চেয়েছিলেন সঞ্জীব। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দফতরের উত্তর না পেয়ে তিনি দ্বারস্থ হন কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনে। গত ১৬ অক্টোবর তথ্য কমিশন প্রধানমন্ত্রীর দফতরকে লিখিত ভাবে নির্দেশ দেয়, বিদেশ থেকে ফেরানো কালো টাকা নিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে তথ্য প্রকাশ করতে হবে। আজ তারই উত্তর দিতে অস্বীকার করে মোদীর দফতর জানিয়েছে, কালো টাকার ব্যাপারে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করে তদন্ত শুরু হয়েছে। এই অবস্থায় নাম প্রকাশ করলে দোষীদের শাস্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে। এরপরেই ক্ষুব্ধ সঞ্জীব প্রশ্ন তোলেন, কাদের বাঁচাতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী? যার জন্য উদ্ধার হওয়া কালো টাকার পরিমাণও জানাতে চাইছেন না?
এখানেই শেষ নয়। তথ্য জানার অধিকার আইনে আরও একটি বিষয় জানতে চেয়েছিলেন সঞ্জীব চতুর্বেদী। কত জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দূর্ণীতির অভিযোগ উঠেছে? সেই তথ্যও জানাতে অস্বীকার করেছে মোদীর দফতর। এ ক্ষেত্রে তাদের হাস্যকর যুক্তি হল, ‘এই বিষয়ে বিতর্কের অবকাশ আছে এবং প্রক্রিয়াটাও অত্যন্ত জটিল’।
১৩ বছর আগে মনমোহন সিংয়ের আমলে তথ্য জানার অধিকার আইন তৈরি হওয়ার পর তাকে দু’হাত তুলে স্বাগত জানিয়েছিলেন বিরোধীরা। সেই দলে ছিলেন খোদ নরেন্দ্র মোদীও। কিন্তু তথ্যই বলছে, মোদী ক্ষমতায় আসার পরেই এই আইন গুরুত্ব হারিয়েছে। কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনের হালও একই।
প্রসঙ্গত, সাড়ে চার বছর আগে লোকসভা ভোটের প্রচারে মোদীর অন্যতম অস্ত্রই ছিল কালো টাকা। বিদেশে গচ্ছিত কালো টাকা দেশে ফিরিয়ে প্রত্যেক দেশবাসীর অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা জমা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর সেই নিয়ে টুঁ শব্দটিও করেননি। চুপ থেকেছেন তাঁর মন্ত্রীরাও। উল্টে মোদীর প্রধান সেনাপতি অমিত শাহ এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ওটা ছিল স্রেফ নির্বাচনী চমক।
বিরোধীদের অভিযোগ, যোজনা কমিশন, সিবিআই, র, ইডি, সিআইসি-র মতো প্রতিষ্ঠানগুলি মোদী জামানায় প্রবল ধাক্কা খেয়েছে। মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন যা হয়েছিল, এখন কেন্দ্রেও পুরোদমে সেই অব্যবস্থা চলছে।