বাংলা বারংবারই বঞ্চনার শিকার। তা কেন্দ্রীয় সুযোগ সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রেই হোক, কিংবা ক্রীড়াক্ষেত্রে। ভুরি ভুরি উদাহরণ রয়েছে তার। এবার দেশের জাতীয় ক্রিকেট টিম থেকে বাদ পড়তে পারেন বাংলার প্রতিভাবান খেলোয়াড় তথা ভারতের অন্যতম সেরা উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহা।
টেস্টে এই মুহূর্তে উইকেটকিপার হিসেবে যে ঋষভ পন্থই ভারতের এক নম্বর পছন্দ, গতকালই তা পরিষ্কার করে দিয়েছেন দলের হেড কোচ রবি শাস্ত্রী। রবিবার তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ঋদ্ধিমান সাহা সুস্থ হয়ে ফিরে এলে দলে তো অনেক উইকেটকিপার হয়ে যাবে। তখন প্রথম পছন্দ হিসাবে টিমে রাখবেন কাকে? উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমাদের সব সময় ক্রিকেটারের বর্তমান ফর্মটা দেখতে হয়। দল নির্বাচনের ক্ষেত্রেও কে কেমন ফর্মে আছে, এই ব্যাপারটাই সবার আগে প্রাধান্য পাবে।’
একইসঙ্গে তিনি পরিষ্কার ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, পন্থই সেই দৌড়ে এগিয়ে থাকবেন। পন্থকে নিয়ে শাস্ত্রী আরও বলেছেন, ‘পন্থ হল আর এক জন ক্রিকেটার যে সুযোগ পেয়ে তা পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছে। এখন ওকে ওর জায়গা পাকা করতে হবে।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দুই টেস্টেই সেঞ্চুরির মুখ থেকে ড্রেসিংরুম থেকে ফিরে যান ঋষভ। বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে তাঁকে প্রথম দুই ওয়ান ডে ম্যাচের দলেও রাখা হয়েছে। দিল্লির এই তরুণ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানকে যে অভিজ্ঞতা অর্জনের আরও সুযোগ দিতে চান, সেই ইঙ্গিত শাস্ত্রীর কথাতেই রয়েছে।
কিন্তু উইকেটকিপিং-এর দিক থেকে ঋদ্ধি অনেকটাই এগিয়ে পন্থের চেয়ে। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে, ধোনির পরেই ভারতের সেরা উইকেটকিপার বাংলার ঋদ্ধিমান। মাঠে তিনি বারবার নিজের প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছেন। এমনকি ব্যাটেও তিনি খুব একটা নিরাশ করেননি কখনও। বরং সুযোগ পেলে তা কাজে লাগানোর প্রাণপণ চেষ্টা করেন। সেই তাঁকে নিয়েই কিনা দলে সংশয়!
জানা গেছে, ঋদ্ধি এখন আগের চেয়ে সুস্থ হয়ে উঠলেও আসন্ন রঞ্জি ট্রফিতে ভাল পারফরম্যান্স দেখিয়েই দলে ফিরতে হবে তাঁকে। ৬ ডিসেম্বর থেকে যেখানে অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ শুরু হচ্ছে, সেখানে এক মাস আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরেই নিজেকে প্রমাণ করে দলের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া সফরে যাওয়া কতটা সম্ভবপর, সেটাই প্রশ্ন। আর ভাল পারফরম্যান্স দেখালেই যে সঙ্গে সঙ্গে টিমে ঠাঁই হয়ে যাবে তেমনও নয়। কারণ কোনও টুর্নামেন্ট শুরুর কিছুদিন আগেই দল নির্বাচন হয়ে যায়।
তাই ঋদ্ধি যে একপ্রকার বঞ্চনারই শিকার বা মাঠের রাজনীতির ফলেই বাদ পড়তে হলো তাঁকে, এমনটাই মনে করছে বাংলার ক্রিকেট ভক্ত এবং রাজ্যবাসীরা।