‘এপারেও যে বাংলাদেশ ওপারেও সেই বাংলা’। মাঝে ইছামতী। দশমীর দিন এই ইছামতীতেই মাতবে দুই বাংলা।
একই দিনে একইসঙ্গে টাকির ইছামতীতে দুই বাংলার প্রতিমা বিসর্জন প্রাচীন রীতি। কিন্তু মাঝে কয়েক বছর এই রীতিতে ভাটা পড়েছিল। এবছর থেকে ফের টাকিতে আড়ম্বরের সঙ্গে প্রতিমা বিসর্জন হবে। ইছামতীর পাড়ে দাঁড়িয়ে ফের শোনা যাবে দুই বাংলার মিলনের ‘হারানো সুর’।
ইছামতীর এপারে দেশের শেষ সীমান্ত শহর টাকি। ওপারে বাংলাদেশের টাউন শ্রীপুর গ্রাম। মাঝে ইছামতীই দুই দেশের আন্তর্জাতিক সীমান্ত। মাঝখানে কোনও কাঁটাতার নেই। দশমীর দিন নৌকোয় প্রতিমা নিয়ে ইছামতী নদীতেই চলত শোভাযাত্রা। তারপর হত বিসর্জন। এসব দেখতে ভিড় জমাতেন দুই দেশের লাখো মানুষ। বাংলাদেশের প্রতিমা আনা হত এপারে। এদেশের প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হত ওপারে। দু দেশের মানুষও একে অপরের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করতেন। উপহার দেওয়া-নেওয়াও চলত। কিন্তু দুর্ঘটনা
ও নিরাপত্তাজনিত কারণে ৭ বছর আগে এই রীতি বন্ধ হয়ে যায়।
তারপর থেকে দুই বাংলার বিসর্জন হত ‘খাপছাড়া’। কখনও এপার বাংলার আগে, কখনও ওপার বাংলার। গত বছর থেকে আবার একসঙ্গে বিসর্জন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে এপারের অনেক প্রতিমা জলে নামলেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মাত্র দুতিনটি প্রতিমার বিসর্জন হয়েছিল।
এবার দুই দেশই চেয়েছিল, আগের মতোই সগৌরবে দুই বাংলার বিসর্জন রীতি ফিরুক। কয়েকদিন আগেই দুই দেশের প্রতিনিধিরা সবুজ সংকেত দিয়েছেন। দুই দেশের বৈঠকও হয়েছে। সেখানেই চূড়ান্ত সীলমোহর পড়ে। টাকি পুরসভার চেয়ারম্যান সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আগের মতোই এবার আগামী ১৯ অক্টোবর, দশমীর দিন দুপুর ৩ টের সময় ইছামতীতে দুই বাংলার বিসর্জন শুরু হবে। চলবে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত। নদীর মাঝখানে এদেশের বিএসএফ এবং ওপারের বিবিজি নৌকো নিয়ে পাহারা দেবে। বিসর্জন দেখার জন্য প্রতিমা নৌকোয় চাপিয়ে সীমারেখা বরাবর দুই দেশ নিজেদের প্রতিমা ঘোরাবে। যাতে দুই তীরে অপেক্ষারত সাধারণ মানুষ যাতে দুই দেশের প্রতিমা দেখার সুযোগ পান’।