আর বেশি দেরি নেই। শুরু হয়ে গিয়েছে কাউন্টডাউন। আগামী বছরের দোরগোড়াতেই বসতে চলেছে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আসর। এই মেগা সম্মেলনকে সফল করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ রাজ্য সরকার। শুক্রবার তার প্রস্তুতি-বৈঠক সারলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন আলিপুরের ‘সৌজন্য’-এ শীর্ষ শিল্পপতিদের নিয়ে বিজিবিএসের পর্যালোচনায় সকলে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, শিল্প বিনিয়োগ এবং শিল্পবন্ধু পরিবেশের ক্ষেত্রে বাংলাই সেরা। বেঙ্গল অম্বুজা গোষ্ঠীর হর্ষ নেওটিয়া, আরপিজি-র সঞ্জীব গোয়েঙ্কা, আইটিসি-র সঞ্জীব পুরী, রিলায়েন্সের তরুণ ঝুনঝুনওয়ালা, চর্মশিল্পের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান রমেশ জুনেজা, ইউনিভার্সাল সাকসেস গোষ্ঠীর প্রসূন মুখোপাধ্যায় হয়ে টেকনো ইন্ডিয়ার সত্যম রায়চৌধুরী, সকলেই একবাক্যে জানিয়ে দিলেন, বাংলায় নিশ্চিন্তে ব্যবসা করছেন তাঁরা। উল্লেখ্য, এবারে শিল্প-সম্মেলনের উদ্বোধনী সঙ্গীত লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। গানের কথায় রয়েছে, ‘এই পৃথিবী একটাই দেশ’। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিল্প-সাধনাকে প্রশংসা করে বলেন, “আমি ক্রিকেটার হলেও শিল্পস্থাপনের পথে ইতিমধ্যেই পা বাড়িয়েছি। আমাদের তৃতীয় স্টিল প্ল্যান্ট আসছে। উৎপাদন শুরু হবে এক বছরের মধ্যে। এরপরেই রসিকতা করে তিনি বলেন, সব ঠিকঠাক থাকলে তারপর শিল্পপতি হিসেবে কোন জায়গায় দাঁড়াব, বলতে পারব।” আগামী বছর শিল্প-সম্মেলনে আমেরিকা-জাপান-সহ বিভিন্ন দেশের প্রথম সারির শিল্পগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, শিল্প সম্মেলনে থাকবেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রীও। বাংলার শিল্প নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি থেকে বড় শিল্প স্থাপনের ক্ষেত্রে বাংলা নিজেকে প্রমাণ করেছে। বিশেষ করে দেশের পর্যটন মানচিত্রে বাংলা ছাপ রেখেছে। এ-রাজ্যের হোম-স্টের ভাবনা দেশকে নতুন দিশা দেখিয়েছে।
পাশাপাশি, শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েঙ্কা বলেন, “২২টি রাজ্যে আমার ব্যবসা রয়েছে। কিন্তু গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, ব্যবসা করার ক্ষেত্রে সবদিক থেকে বাংলাই শ্রেষ্ঠ।” ইউনিভার্সাল সাকসেসের প্রসূন মুখোপাধ্যায় বলেন, “এখানে সরকার ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা রয়েছে। ফলে শিল্পগোষ্ঠীরা বাংলায় লগ্নি করতে পিছপা হন না।” শুক্রবার দিল্লীতে রাজ্য সরকার এবং ফিকির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সম্মেলনে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “আমাদের রাজ্য সমস্ত রকম প্রাকৃতিক সম্পদ, পরিকাঠামোগত সহযোগিতা, দক্ষ কর্মী, সঠিক জায়গায় শিল্প স্থাপনের জন্য জমি-সহ একাধিক সুযোগ-সুবিধা নিয়ে তৈরি রয়েছে। বাংলায় বিনিয়োগ এখন অনেক সহজ।” কলকাতায় বিজিবিএসের প্রস্তুতি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্য উপদেষ্টা ও ডব্লুবিআইডিসির চেয়ারম্যান আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র। অমিতবাবুই মূলত সূত্রধরের কাজ করেছেন প্রস্তুতি বৈঠকে। ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী-সহ একাধিক আমলা-সহ মন্ত্রী শশী পাঁজা, অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম, ইন্দ্রনীল সেন, সুজিত বসু। ছিলেন বিভিন্ন দেশের কনসাল জেনারেলরা। ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিকরা। ছিলেন চলচ্চিত্রপরিচালক গৌতম ঘোষও।