রবিবারের ছুটির আমেজকে পাত্তা না দিয়েই সারাদিন ধরে প্রচারে ব্যস্ত থাকলেন আসানসোল কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেন। বারাবনির পাঁচগাছিয়ায় প্রাক্তন বিধায়ক মানিক উপাধ্যায়ের ছবিতে মাল্যদান করেন মুনমুন। তারপরে পঞ্চায়েত স্তরে পাঁচগাছিয়া অঞ্চলে প্রকাশ্য জনসভার মাধ্যমে তার দ্বিতীয় দফার প্রচার শুরু করলেন মুনমুন
গতকাল মুনমুনের সঙ্গে ছিলেন মানিকবাবুর ছেলে তথা বর্তমানে বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়। মূলত কোলিয়ারি অধ্যুষিত এলাকায় প্রচার চালান মুনমুন। সেখানেই কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রম-নীতির সমালোচনা করেন তিনি। অভিযোগ করেন, খনি-বন্ধের চেষ্টারও। মুনমুনকে স্বাগত জানাতে আদিবাসী নৃত্য পরিবেশিত হয়। সেখানে তিনি নিজেও যোগ দেন সেই নৃত্যে। পরে সেখানে বক্তব্যও রাখেন। আহ্বান জানান, ‘‘এখানে প্রচুর ফুল আছে। তার মধ্যে ভোটে ঠিক ফুলটিকেই বেছে নিন। ভোটের দিন যেন অশান্তি না হয়।
রবিবারের ওই প্রকাশ্য জনসভায় প্রার্থীকে ঘিরে স্থানীয় মানুষের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো৷ এদিন বারাবনিতে উপস্থিত ছিলেন অনেক আদিবাসী মহিলা। সভায় তাঁদের নাচতে দেখে এগিয়ে যান মুনমুন। তাঁদের সঙ্গে নাচে অংশ নেন তিনি। আদিবাসী মহিলাদের সঙ্গে ধামসা–মাদলের তালে তৃণমূল প্রার্থীকে নাচতে দেখে চারদিকে আলোড়ন পড়ে যায়৷ স্থানীয় মানুষও ছুটে আসেন ওই সভায়।
মুনমুন স্থানীয়দের সাবধান করে দেন বিরোধীদের সম্পর্কে। জানান, তাঁকে হারাতে বিরোধীরা নানা ষড়যন্ত্র করতে পারে। তবে তাদের ফাঁদে পা দেওয়া চলবে না। তিনি দলের কর্মীদের নমনীয় হওয়ার পরামর্শ দেন। সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহার করতে বলেন। বন্ধুর মতো ব্যবহার করে বিরোধীদেরও দলে নিয়ে আসার কথা বললেও তাদের প্ররোচনা সম্পর্কে কর্মীদের সতর্ক থাকারও নির্দেশ দেন। মুনমুন বলেন, ‘কোনও রাজনৈতিক দল বা বাইরের কেউ যদি ঝামেলা করার চেষ্টা করে, তা হলে তাতে না জড়িয়ে তাদের ভালভাবে বুঝিয়ে তৃণমূল দলে নিয়ে আসতে হবে৷ কোনও ভাবেই তাদের প্ররোচনায় পা দেওয়া চলবে না।’
মুনমুন প্রসঙ্গে বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাঁকুড়ার বিদায়ী সাংসদ মুনমুন সেনকে আসানসোলে প্রার্থী হিসেবে পাঠিয়েছেন৷ তাঁর স্বপ্নপূরণ করতে তাঁকে বারাবনি অঞ্চল থেকে বিপুল ভোটে লিড দিতে হবে৷’ নিজের জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত মুনমুনও। সে কথা এদিন জোর গলায় বলেনও তিনি। জানিয়ে দেন, বাঁকুড়ায় তিনি অনেক কাজ করেছেন। আর সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ওপর আস্থা রেখেছেন। সেইজন্য যে কেন্দ্রে আগেরবার তৃণমূল জিততে পারেনি, সেই কেন্দ্রে তাঁকে পাঠিয়েছে। এই কেন্দ্র জিতে তিনি যে মুখ্যমন্ত্রীকে উপহার দিতে পারবেন, সেই আত্মবিশ্বাস তাঁর রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। একই সঙ্গে এ কথাও পরিষ্কার জানিয়ে দেন, এই কেন্দ্রে আগেরবারের সাংসদ কোনও কাজই করেননি।