দেশের অধিকাংশ জনতা যুদ্ধের দাবিতে সোচ্চার। বিজেপি মন্ত্রী প্রকাশ্য জনসভায় বলছেন, লোকসভা ভোট বন্ধ রেখে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হবে। কিন্তু তিনি শহীদ জওয়ান বাবলু সাঁতরার স্ত্রী যুদ্ধ চান না। তাঁর মতে, সমাধানের পথ খোঁজা উচিৎ, তবে যুদ্ধের মধ্যমে নয়।
শনিবার তখনও এসে পৌঁছয়নি তাঁর স্বামীর কফিনবন্দি দেহ। সকাল থেকে বাউড়িয়ার চককাশী রাজবংশীপাড়ায় ভিড়। ক্ষণে ক্ষণে স্লোগান উঠছে, ‘বাবলু সাঁতরা অমর রহে’। দাবি উঠছে দোষীদের শাস্তির। তার মধ্যেই মুখ খুললেন মিতা। পুলওয়ামায় জঙ্গি হানায় নিহত সিআরপিএফ জওয়ান বাবলুর স্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধে এই সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করি না। যুদ্ধে আরও মায়ের কোল খালি হবে। সরকারের উচিত সমাধানের পথ খোঁজা। তবে, যুদ্ধের মাধ্যমে নয়।’
জঙ্গিদের নৃশংসতার প্রতিবাদে ঝড় উঠছে সর্বত্র। কার্গিল-যুদ্ধে বাবাকে হারানো গুরমেহর কৌর আগেই বলেছিলেন, ‘আমাদের আসল শত্রু যুদ্ধ।’ শুক্রবার ফের টুইট করেন, ‘দেশবাসীকে তাতানো চলছে। হামলার চক্রটা বন্ধ হওয়া দরকার।’ দু’দিন আগে স্বামীকে হারানো মিতাও বললেন, যুদ্ধ সমাধান নয়।
এ দিন চককাশীর সর্বত্র উড়েছে জাতীয় পতাকা। অনেক বাড়িতে হাঁড়ি চড়েনি। খোলেনি দোকান-বাজার। সকাল থেকে রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ। তাঁরা একবার বাবলুর কফিন ছুঁতে চান। কফিন এসে পৌঁছয় সাড়ে ছ’টা নাগাদ। বাড়ির সামনের মাঠে সিআরপিএফের তরফে ‘গান স্যালুট’ দেওয়া হয়। বিদায় জানানো হয় নিহত সেনানীকে।
মিতা আগেই বলেছিলেন, ‘শুনেছি, ওঁদের কনভয়ে নিরাপত্তায় গাফিলতি ছিল। ঠিক-ভুল জানি না। তবে স্বামীর ইউনিট ছাড়া এ দিন বিকেল পর্যন্ত কেন্দ্রের তরফে কেউ যোগাযোগ করেননি। আমি সামান্য বেতনে বেসরকারি স্কুলে পড়াই। মেয়েকে নিয়ে চলাটাই এখন চিন্তার। সরকার কিছু করুক।’ প্রয়োজনে তিনি সেনাবাহিনীতেও নাম লেখাতে রাজি বলে জানিয়েছেন মিতা। তাঁর প্রশ্ন, ‘সবাই যদি পিছিয়ে যায়, দেশরক্ষা করবে কারা?’