শেষ পর্যন্ত উঠল না শাট ডাউন। ভেস্তে গেল মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ডেমোক্র্যাটদের বৈঠকও। আমেরিকা-মেক্সিকো সীমান্তে দেওয়াল তোলার অর্থ বরাদ্দে রাজি নন বলেই ফের জানিয়ে দিলেন তাঁরা। যা শুনে রাগে টেবিল চাপড়ে বেরিয়ে গেলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর ফলে মার্কিন সরকারের শাটডাউন তো উঠলই না। বরং এ বার ট্রাম্প জরুরি অবস্থা জারি করে দেওয়াল তোলেন কি না, সেদিকেই নজর সকলের।
গত বুধবার ১৯ দিনে পড়েছে আমেরিকার শাটডাউন। ১৯৯৫-৯৬ সালের ২১ দিনের রেকর্ড বাদ দিলে এটাই এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে লম্বা শাটডাউন। বন্ধ ফেডেরাল সরকারের বেশ কিছু দফতর। বেতন পাচ্ছেন না প্রায় ৮ লক্ষ কর্মী। কিন্তু ট্রাম্পের গোঁ, দেওয়াল তুলতে ডেমোক্র্যাটরা রাজি না হলে তিনি শাটডাউন তুলবেন না।
হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এর স্পিকার, ডেমোক্র্যাট নেত্রী ন্যান্সি পেলোসি এবং সেনেটের সংখ্যালঘু নেতা চাক শুমারের সঙ্গে বুধবার হোয়াইট হাউসে বৈঠকে বসেছিলেন ট্রাম্প। উদ্দেশ্য, দেওয়াল নিয়ে রফাসূত্রে আসা। কিন্তু ন্যান্সিরা জানিয়ে দেন, সরকারি কাজকর্ম চালু হলে ৩০ দিনের মধ্যে তাঁরা দেওয়াল-প্রস্তাবে সায় দেবেন, এমন নয়। মেক্সিকো সীমান্তে ৫৭০ কোটি ডলার খরচ করে দেওয়াল তুলে অবৈধ অভিবাসন আটকানো যাবে বলে তাঁরা মনে করেন না।
যেহেতু মেক্সিকো স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, এই দেওয়ালের খরচ তারা কোনও অংশেই বহন করবে না। তাই ডেমোক্র্যাটরা এখন অর্থ বরাদ্দে সায় না দিলে ট্রাম্পের পক্ষে দেওয়াল তোলা কোনও মতেই সম্ভব নয়। কারণ হাউস-এ ডেমোক্র্যাটরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। দু’পক্ষের এই দড়ি টানাটানিতেই ১৯ দিন ধরে শাটডাউন চলছে মার্কিন মুলুকে।
তবে বুধবার ন্যান্সিরা বুঝিয়ে দিলেন, তাঁরা মাথা নোয়াবেন না। আবার ট্রাম্পও বুঝিয়ে দিলেন, তিনি ‘না’ শুনতে রাজি নন। টেবিল চাপড়ে বেরিয়ে গিয়েই থেমে থাকেননি তিনি। টুইট করে জানান, ‘চাক আর ন্যান্সির সঙ্গে বৈঠক ছেড়ে এইমাত্র বেরিয়ে এলাম। পুরো সময়টা নষ্ট! জিজ্ঞেস করলাম, সরকার যদি ঝাঁপ তোলে, তোমরা কি ৩০ দিনের মধ্যে সীমান্ত সুরক্ষা প্রকল্পে সায় দেবে? ন্যান্সি বলল, ‘না’। আমি বললাম, বাই বাই!’
ট্রাম্প যদিও শুনিয়েই রেখেছেন, জরুরি অবস্থা জারি করার অধিকার তাঁর আছে। প্রশ্ন, মঙ্গলবার তিনি যখন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে দেওয়ালের উপকারিতা ব্যাখ্যা করলেন, তখনই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলেন না কেন? ট্রাম্পের জবাব, ‘ভেবেছিলাম, বৈঠকেই রফা হয়ে যাবে। আর না হলে তো জরুরি অবস্থার রাস্তা খোলা আছেই। তখন ভেবে দেখা যাবে।’