‘দিদির বীরভূম সফরের পর থেকেই উর্বর জমি পাঁচন দিয়ে সোজা করার কাজ শুরু করে দিন।’ দলীয় কর্মীদের উজ্জীবিত করতে আবারও আসরে নেমে পড়লেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট।
আগামী ১৯ জানুয়ারি তৃণমূলের ঐতিহাসিক ব্রিগেড সমাবেশ। তার প্রচারেই রবিবার বীরভূমের লাভপুরে জনসভা করেন জেলা সভাপতি। সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরি-সহ অন্যান্যরা। সভার শুরুতেই নাম না করে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের উদ্দেশ্যে কেষ্ট বলেন, লোকসভা-বিধানসভা ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রতিবারই আসে। তবে ভোট কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনী নয়, ভোট দেন সাধারণ মানুষই। কিন্তু মূর্খরা তা জানেন না।
চড়াম চড়াম ঢাক আর খোল-খঞ্জনীর পর এবার অনুব্রতের দাওয়াই পাঁচন। গতকাল ফের উর্বর জমি পাঁচন দিয়ে সোজা করার নিদান দেন তিনি। দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, ‘দিদির বীরভূম সফরের পর থেকেই উর্বর জমি পাঁচন দিয়ে সোজা করার কাজ শুরু করে দিন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূম সফরে আসছেন। ফিরে যাওয়ার পরই পাঁচনের বাড়িতে উর্বর জমি সোজা করে নিন।’
অনুব্রতর ভাষণের আগেই লাভপুরের পর্যবেক্ষক অভিজিৎ সিনহা জেলার সুপ্রিমোকে জানিয়ে দেন, লাভপুর পাঁচন নিয়ে তৈরি আছে। লোকসভায় এক লক্ষ ভোটে দলের প্রার্থীকে লিড দেওয়া হবে। এরপরই বক্তব্য পেশ করতে উঠে অনুব্রত পাঁচন প্রসঙ্গ টেনে এনে জানিয়ে দেন, কবে থেকে পাঁচন দেওয়ার কাজ শুরু হবে জেলায়।
বিজেপির কার্যকলাপে ক্ষুব্ধ অনুব্রত বলেন, ‘বিজেপিকে তাড়াতে না পারলে বাংলা এবং বাঙালির বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। আসামে থাকা যাবে না বলে যেভাবে ফতোয়া জারি করেছে, তাতে মনে হচ্ছে আসামটা বিজেপির পৈতৃক সম্পত্তি।’ তাঁর স্পষ্ট কথা, ‘সারা দেশ জুড়ে বিজেপি গৃহযুদ্ধ বাধতে চাইছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে ওদের শেখা উচিত কীভাবে হিন্দু-মুসলিম, বিহারি, গুজরাটি, মারওয়াড়ি সকলকে বাংলার উন্নয়নে সামিল করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাম মন্দির ইস্যু করে অটল বিহারীর মতো মানুষও দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসেননি। তাই মোদীর ফিরে আসার কোনও সম্ভাবনাই নেই। রামের জন্য মন্দির নিয়ে এত লাফালাফি করার কিছু নেই। রাম তো আমাদের ঘরে ঘরেই আছেন। যে কোনও হিন্দুর মনের মন্দিরে রাম রয়েছেন। তাই তো যে কোনও শুভকাজে কিংবা অন্তিম যাত্রায় রামনাম করি আমরা। আসলে মোদীর আচ্ছে দিনের আবেগটা যে কত বড় ধাপ্পা তা প্রমাণ হওয়ার পরই রাম মন্দিরকে আঁকড়ে ধরে ভোট বৈতরণী পার হতে চাইছে বিজেপি। কারণ এবার আর গরিবদের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ করে টাকা বা বেকারদের চাকরি, এই ধাপ্পাবাজি মানুষ মেনে নেবেন না।’