গুজরাতের ২২ টি ‘ভুয়ো’ সঙ্ঘর্ষের তদন্ত রিপোর্ট কিছুতেই প্রকাশ হতে দেওয়া যাবে না। প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়েছেন সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা। বিরোধী শিবিরের প্রশ্ন, তবে কি অপ্রিয় সত্য বেরিয়ে পড়ার ভয় পাচ্ছেন তিনি?
মোদী জমানায় কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী হিসেবে দিল্লিতে আসার আগে তুষার মেহতা গুজরাত সরকারেরই আইনজীবী ছিলেন। ফলে ‘ভুয়ো’ সংঘর্ষ সংক্রান্ত মামলাগুলি মেহতার বিলক্ষণ জানা। তাই সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসা ঠেকাতেই উঠে-পড়ে লেগেছেন তিনি। প্রসঙ্গত, যে ২২টি মামলা নিয়ে তদন্ত, সেগুলি ২০০২ থেকে ২০০৬-এর মধ্যেকার। অর্থাৎ যে সময়ে নরেন্দ্র মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী এবং অনেকখানি সময় জুড়ে অমিত শাহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
প্রাক্তন বিচারপতি এইচ এস বেদীর ওই রিপোর্ট এ দিন শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট অন্য আইনজীবীদের হাতে তুলে দেয়নি। কিন্তু প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ গুজরাত সরকারকে এক সপ্তাহের মধ্যে জানাতে বলেছেন, কেন ওই রিপোর্ট মামলাকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে না।
প্রধান বিচারপতি প্রথমেই বলেন, ‘বহু বছর ধরে এই মামলা ঝুলে রয়েছে। আমাদের মেটাতে হবে হবে এটা। আর কবে করব?’ জাভেদ ও ভার্গিসের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ ও নিত্যা রামকৃষ্ণন সঙ্গে সঙ্গে দাবি তোলেন, তাঁদের তদন্ত রিপোর্টের কপি দেওয়া হোক। তখনই মাঠে নামেন সলিসিটর জেনারেল। তিনি বলেন, এখনই রিপোর্টের কপি অন্য কাউকে দেওয়া ঠিক হবে না। কারণ তাঁর ‘গুরুতর’ কিছু কথা বলার রয়েছে। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ঠিক আছে, বলুন।’ তাতে মেহতা বলেন, তিনি যা বলার হলফনামা দিয়ে বলতে চান। এর পরে তিনি দাবি তোলেন, জানুয়ারি মাসে শুনানি হোক। কিন্তু প্রধান বিচারপতি নিজের অবস্থানে অনড় থেকে জানিয়ে দেন, আগামী ১২ ডিসেম্বরই শুনানি হবে।
২০০৭ সালে গুজরাতে ২২টি ‘ভুয়ো’ সংঘর্ষের অভিযোগ ঘিরে সিবিআই বা এসআইটি তদন্তের আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন প্রবীণ সাংবাদিক বি জি ভার্গিস ও গীতিকার জাভেদ আখতার। সুপ্রিম কোর্ট তখন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম বি শাহের নেতৃত্বে এ নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করে। পরে কমিটির নেতৃত্বে আসেন বিচারপতি বেদী। চলতি বছরের গোড়ায় তাঁর রিপোর্ট জমা দেন তিনি। সোহরাবুদ্দিন-তুলসীরাম প্রজাপতি-ইশরাত হত্যার তদন্ত অবশ্য এই রিপোর্টের অন্তর্গত নয়। কারণ সেগুলিতে আগে থেকেই সিবিআই বা এসআইটি তদন্ত চলছিল।